• সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

নর্দান ইউনিভার্সিটির ছাত্রের আত্মহত্যা প্ররোচণায় প্রেমিকার স্বীকারোক্তি

প্রকাশ:  ২৬ জুন ২০২২, ১৬:৪৮
খুলনা প্রতিনিধি

খুলনায় নর্দান ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের ছাত্র প্রমিজ নাগের আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে প্রেমিকা সুরাইয়া ইসলাম মিম।

শনিবার (২৫ জুন) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: আল আমিন আসামি মিমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন পরে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো: আতিক মাহমুদ চৌধুরী আসামির জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার (২৪ জুন) র‌্যাব নড়াইল জেলার মাসুমদিয়া এলাকা থেকে মিমকে আটক করে। ওইদিন রাতেই তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেও তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ সম্ভব হচ্ছে না। এর পর রাতে সে জবানবন্দি দিতে রাজি হলে শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০ টার দিকে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। এর পর মিম ৩ ঘন্টা যাবত ঘটনার বিবরণ দিয়ে আদালতকে সকল ঘটনা অবগত করে। তবে আত্মহত্যা প্ররোচনার জন্য মিম দায়ী বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হরসিৎ মন্ডল বলেন, ২০২০ সালে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয় প্রমিজ । এক পর্যায়ে এক সেমিস্টারের বড় মিমের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম, পরে সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয়। মিম প্রায়ই প্রমিজের মেসে গিয়ে সময় কাটাত। দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করার পর সেখান থেকে বের হয়ে নিজের ভাড়াবাড়িতে চলে যেত। তদন্তে প্রকাশ পায় যে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। যেদিন প্রমিজ আত্মহত্যা করে সেদিন দুপুরেও মিমের অবস্থান ওই বাড়িতে ছিল বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন। মিম দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এদিকে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় প্রমিজের কাকাতো ভাই এজাহারে উল্লেখ করেন, মিম প্রায়ই প্রমিজকে বিয়ের জন্য চাপ দিত। তবে সে মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়ায় প্রমিজ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এর পর থেকে মাঝে মাঝে মৃতের বাবার কাছে টাকার জন্য ফোন দিত মিম।

এরপর ২০ জুন বিকেল সোয়া ৫ টার দিকে বাবার নিকট টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে মিমকে মেসে ডাকে প্রমিজ। সেখানে অবস্থানের একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ল্যাপটপ দিয়ে প্রমিজের মাথায় আঘাত করে প্রেমিকা মিম। তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ওইদিন মেস থেকে চলে যায় মিম। প্রেমিকার এ ধরণের আচরণে মানষিকভাবে হতাশ হয়ে পড়ে প্রমিজ।

এর পর ঘটনার দিন ২২ জুন আবারও প্রমিজের বাসায় আসে মিম । এসময় প্রমিজের রুমের দরজা বন্ধ দেখে পাশের রুমে অবস্থানরত সোহান ও বিপ্লবকে ডেকে রুমের দরজা ভাঙ্গতে বলে মিম। এসময় মিমের কথা মতো ওই দু’জন প্রমিজকে ডাকতে থাকে কিন্তু সাড়া না পেয়ে দরজার ফাঁকা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখতে পায় প্রমিজ ফ্যানের হুকের সাথে ঝুলে রয়েছে। এর পর দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে প্রমিজের আত্মহত্যার পর মিম কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

সর্বশেষ শনিবার (২৫ জুন) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: আল আমিন আসামি মিমের জবানবন্দি রেকর্ড করে পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পূর্বপশ্চিম- নাদীর/এনই

নর্দান ইউনিভার্সিটি,খুলনা

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close