• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ভাষা সৈনিক গোলাম আরিফ টিপুকে নিয়ে পীর হাবিবুর রহমানের শেষ স্ট্যাটাস

প্রকাশ:  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৩:৩১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

আমার সন্তানদের নানা অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর ৯০তম জন্মদিন ছিলো গতকাল।আমার অন্তর আজ সকালে উইশ করে আমাকে জানালো। তিনি ৫০দশকের একদম শুরুতে একাধারে তুখোর ছাত্রনেতা ও ফুটবলার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ভাষা আন্দোলনে রাজশাহী কলেজের ছাত্র ও ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে কারাবরন করেন।সে সময় গোয়েন্দা কর্তারা জেলে জেরাকালে বলেছিলেন,"তার মাথায় পেরেক টুকে দিলে স্ক্রু হয়ে বের হয়ে আসবে"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হন। ৫৩সালে দ্বিতীয় কমিটিতে ভাষা মতিনের সাথে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা দলের ফুটবলার এ ছাত্রনেতা আন্দোলনের কারনে ঢাবি থেকে বহিস্কৃত হন এবং রাবি থেকে প্রথম ব্যাচে মাস্টার্স ও আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি অর্জন করেন। আজীবন মস্কোপন্হী বাম রাজনীতি শেষে ৯১সালে রাজনীতিতে অবসর নেন। এদেশের সকল সামরিক শাসনবিরোধী গনতান্ত্রীক ও সাম্প্রাদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রভাগের নেতা।

দেশের প্রখ্যাত ডিফেন্স কৌশলী হিসেবে ষাটের দশকে আইয়ুব বিরোধী সকল রাজনীতিবিদদেের হয়ে লড়েন। যেমন স্বাধীন দেশে সামরিক শাসনামলে কারাবন্দী ও মামলার শিকার বিরোধী আওয়ামীলীগসহ সকল রাজনৈতিক নেতা কর্মিদের জন্য সামরিক আদালত থেকে নিম্ন আদালতে লড়েন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ষাটের ছাত্রনেতাদেরই নয়,আশির দশকে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ১৬২জন ছাত্রনেতাকেও আইনি লড়াইয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি করান। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও গেরিলাযোদ্ধা টিপু একজন নির্লোভ নিরাভরন সাদামাটা জীবনের মর্যাদাবান মানুষ হিসেবে সামরিক শাসকদের মন্ত্রীত্বের টোপ গিলেননি।

নীহারবানু হত্যা মামলা থেকে জেনারেল মন্জুর হত্যা মামলা হয়ে ওয়ান ইলেভেনে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান ডিফেন্স কৌশলী ছিলেন। ওয়ান ইলেভেনে ছাত্রবিক্ষোভে আটক রাবির শিক্ষক ছাত্রদের জন্য আইনি লড়াই করে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সাইদুর রহমানকে মুক্ত করেন। ঢাবির সাবেক ভিসি এমাজউদ্দিন আহমেদ কে ফজলুল হক হলের ভিপি এবং মনিরুজ্জামান মিয়াকে রাকসুর প্রথম ভিপি নির্বাচিত করতে তিনিই ছিলেন মূল কারিগর।রাজশাহীর সর্বজন শ্রদ্ধেয় গোলাম আরিফ টিপু এখনো একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর। একটা সময় তার আইনি লড়াই,জেরা,সাবমিশন শুনতে আদালতে আইনজীবিদের সাথে অগনিত সাধারন মানুষ ও জড়ো হতো।রাজশাহী আইনজীবি সমিতির সভাপতি থেকে বাংলাদেশ বারকাউন্সিলের সদস্য হয়েছেন বহুবার। রাবির সিন্ডিকেট সদস্যও ছিলেন অনেকবার বহু বছর আগে। একমাত্র পুত্রের অকাল মৃত্যু তাকে মানসিক ভাবে অসহনীয় আঘাত দিয়েছে। আল্লাহ তাকে শতায়ু করুন,সুস্থ্ জীবনে।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

পূর্বপশ্চিম- এনই

পীর হাবিন,পীর হাবিবুর রহমান
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close