• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কবে থেকে শিক্ষকেরা হয়ে উঠলো এরকম বেরহম?

প্রকাশ:  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:১৯
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় টিকেও ভর্তি হতে পারছেন না নিপুন বিশ্বাস।

নিপুন দরিদ্র ঘরের সন্তান। তার বাবা নাপিতের কাজ করে বহু কষ্টে সংসার চালান। ফলে নিপুনের কোনো স্মার্ট ফোন নাই। স্মার্ট ফোন এবং নেট কানেকশন না থাকাতে তার পক্ষে বারবার ওয়েবসাইটে ঢুকে জানা সম্ভব হচ্ছিলো না সে টিকেছে নাকি টিকে নাই। নিয়ম ছিলো কর্তৃপক্ষ মেসেজ দিয়ে জানাবে। কিন্তু তার মোবাইলে মেসেজও আসে নাই। যে দিন ভর্তি হওয়ার শেষ তারিখ ছিলো তার আগের দিন সে কারো একজনের কাছে জানতে পারে সে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছে। তারপরই দ্রুত টাকা জোগাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হয় সে। যেহেতু ওটা ছিলো শেষ দিন, সে ফোন করে ডিনকে জানায় যে সে পথে আছে। যাই হোক তার পৌঁছাতে পৌঁছাতে দেরী হয়ে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ভর্তি করতে অপারগতা জানায়।

এই পর্যন্ত পড়ে আমি চোখ বন্ধ করে নিপুনকে দেখতে পাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের বাইরে জীর্ন স্যান্ডেল পায়ে নিপুন দাঁড়িয়ে। তার চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে। তার গলা আটকে আটকে আসছে। সে বুঝতে পারছে না সে কাকে দোষ দিবে? তার মোবাইল না থাকাকে? মেসেজ না আসাকে? পথে দেরী হওয়াকে? নাকি তার দরিদ্র পিতাকে?

আচ্ছা কবে থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলা এতো নিষ্ঠুর হয়ে উঠলো? কবে থেকে শিক্ষকেরা হয়ে উঠলো এরকম বেরহম? আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি নাই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষকের নিবিড় সান্নিধ্য পেয়েছি। আমি তো দেখেছি তারা ছাত্রদের বিপদে আপদে কিভাবে পাশে দাঁড়ান। আইনকে ছাত্রের পথের কাঁটা না করে, আইনের হাত মচকে দিয়ে ছাত্রের জন্য রাস্তা বানান। সেই সব শিক্ষকদের দিন কি তবে শেষ? আমরা তবে কাদের শিক্ষক বানাচ্ছি? কি শিক্ষা দিবেন তাঁরা আমাদের?

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এখনও সময় শেষ হয়ে যায় নাই প্রমাণ করার যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হৃদয়ও থাকা লাগে।

(ফেসবুক স্ট্যাটাস)

লেখক: চলচ্চিত্র নির্মাতা।

পূর্বপশ্চিম-এনই

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close