• শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

গোটা দেশকে বিপন্ন করে তুলেছে সরকার: ফখরুল

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০২২, ১৪:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান সরকার গোটা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৮ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই। একজন নারী ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় রাতের অন্ধকারে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে সম্মান দেওয়ার জন্য সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ও আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন সংযোজন করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু।

আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে আমাদের দুঃখ হয়, শুধু ইসলামের পক্ষে থাকার কারণে অনেক আলেম-ওলামাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কথা কিন্তু আমরা ভুলে যাইনি। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা ও পাঠাগার তৈরি করেছিলাম। মন্দিরেও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়েছিলো।

তিনি বলেন, আজ সরকার বাহবা নিচ্ছে এই বলে যে, তারা কওমি মাদরাসার জন্য অনেক কাজ করেছে। কওমি মাদরাসার দাওরা শিক্ষাকে মাস্টার্সের সম্মান দিয়েছে। কিন্তু এ কাজটা বিএনপির আমলে প্রায় শেষ হয়ে যায়। আজকে আলেমদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সরকার সেই কাজটিই ভালোভাবে করে। তারা গোটা দেশকেই বিপন্ন করে ফেলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতির কোনো খবর যেন প্রকাশ না হয়। এমনিতেই চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে বলে দেওয়া হয় কোন খবর যাবে কোনটা যাবে না। খবর পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। আসলে সরকার গোটা দেশে বর্গিদের মতো লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, আজকে চলমান কঠিন সময়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী সরকারকে মোকাবিলা শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসবের দায় শেখ হাসিনা ও সরকারের। কারণ, তারা বেআইনি হুকুম দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দেশের প্রতিটি থানায় যারা বিএনপি করে এমন আটজন, অর্থদাতা পাঁচজনের নামের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। এটা কি গণতন্ত্র?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি সংগঠন নিহত আবরার ফাহাদের স্মরণে কর্মসূচি পালন করতে গেলে তাদের মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা দিয়েছে। তারা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলে নিয়েছে। দেশে অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মসজিদ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইমাম সাহেব কী খুতবা পাঠ করবেন সেটাও নির্ধারণ করা হয়। পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এটা কি ধর্মীয় স্বাধীনতা? প্রকৃতপক্ষে আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করছে।

তিনি বলেন, সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। কারণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। তাদের থেকে মুক্তি পাওয়ার একটিই পথ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারকে দ্রুত পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। এক্ষেত্রে জনমত তৈরি করার জন্য আলেম-ওলামাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ যাদের চায় তারাই ক্ষমতায় যাবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমরা চাই বৈষম্যহীন সামাজিক মূল্যবোধের রাষ্ট্র।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

সরকার,দেশ,মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,বিএনপি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close