• সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানে আবুল হোসেনকে স্মরণ করলেন সেতুমন্ত্রী

প্রকাশ:  ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৮:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজ সৈয়দ আবুল হোসেন নেই। নামটা ভুলে গেলে চলে না। কারণ সূচনালগ্নে আবুল হোসেন ছিলেন, আজ তিনি পরলোকে। আমি তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকালে পদ্মা সেতুর উত্তর থানা সংলগ্ন মাঠে প্রকল্পের মেয়াদ শেষের সমাপনী এবং সুধী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

মরহুম সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন। তিনি যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালেই পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক বিনিয়োগ থেকে সরে গেলে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিত্ব থেকে শুরু করে সংসদ সদস্য পদ পর্যন্ত হারাতে হয়েছে তাকে। এমনকি এক পর্যায়ে দলীয় পদও খোয়ান এই রাজনীতিক। যদিও পরে কানাডার আদালতে সম্ভাব্য দুর্নীতির এই অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। এরপর তার প্রতি রাজনৈতিক সহানুভূতি বাড়লেও আমৃত্যু ছিলেন পর্দার অন্তরালেই। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর ৭২ বছর বয়সে মারা যান সৈয়দ আবুল হোসেন।

অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক অর্জন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেক অর্জন নিজের টাকায় পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব অর্জনের কথা বলতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবে। তবে তার সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জনটি হলো নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করা। শেখ মুজিবের কন্যা বলেই হয়তো এই সাহস করতে পেরেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংক আমাদের হতাশ করে চলে গেলো, অপবাদ দিয়ে পদ্মা সেতু থেকে সরে গেলো। ২০১২ সালের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেন— আমাদের টাকায় পদ্ম সেতু করবো। নেত্রীর ঘোষণা নিয়ে শোরগোল... পাগল নাকি! বিশ্ব ব্যাংক যদি পদ্মা সেতু না করে, আমাদের কী এমন টাকা আছে যে নিজেরাই করতে পারবো! আমাকে উদ্দেশ করেও কত কথাই না কতজন বলেছে। আজ আমরা পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান করছি।’

পদ্মা সেতু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার কথা উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কমিটমেন্ট কাকে বলে! এই পদ্মার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা! মনে আছে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঘন কুয়াশা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। প্রথম স্প্যান বসানোর সময় নেত্রী ছিলেন ওয়াশিংটনে। নেত্রীকে ফোন করে বললাম— প্রথম স্প্যানটা বসানোর জন্য আপনার অপেক্ষ করবো। আপনার উপস্থিতিতে প্রথম স্প্যানটা বসাতে চাই। তিনি বললেন— আমার জন্য পদ্মা সেতুর কাজ এক মিনিটও অপেক্ষা করা যাবে না। এই কমিটমেন্টের সোনালি ফসল আজকের এই পদ্মা সেতু।’

সেতু তৈরির সময় নদীর দুই প্রান্তে ভাঙনসহ প্রতিকূলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন আমার দুচোখ ভরা পানি। এত কষ্ট সবই বুঝি বৃথা যাচ্ছে। একই অবস্থা প্রকল্পের অন্যদেরও। নেত্রী পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কন্টাট করে যত দরকার, না থাকলে জিও ব্যাগ সরবরাহ করতে বললেন। এই হলো বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্ব।’

ওবায়দুল কাদের,পদ্মা সেতু,সেতুমন্ত্রী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close