• শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

ইউপি নির্বাচন উৎসবের বদলে বাজছে বিষাদের করুণ সুর: মাহবুব তালুকদার

প্রকাশ:  ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:২১ | আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান ইউপি নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে সংঘাতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচনে এখন উৎসবের বাদ্যের বদলে বিষাদের করুণ সুর বাজছে। সন্ত্রাস, সংঘর্ষ ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) পঞ্চম দফার ইউপি নির্বাচনে সাভারের আশুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আশুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এক লিখিত প্রতিক্রিয়ায় এই কথা বলেন মাহবুব তালুকদার।

ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম দেখে মাহবুব তালুকদার হতাশা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না।

ইউপি নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দিতে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করেছেন- এমন অভিযোগে নির্বাচন কমিশন তাদের সতর্ক করে চিঠিও দিয়েছে। কিন্ত ইসির অনুরোধ, নির্দেশ উপেক্ষা করে তারা আইন ভঙ্গ করে চলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তৃণমূল থেকে।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, সংসদ সদস্যরা সরাসরি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কলুষিত করেছেন। কেবল চিঠি দেওয়া ছাড়া তাদের সম্পর্কে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। কেউ কেউ সেই চিঠি উপেক্ষা করেছেন। এজন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ অনিবার্য ছিল। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কার না করা হলে তাদের সম্পর্কে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়। অন্যান্য যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, তাদেরকে সামান্য অর্থদণ্ড প্রদান ব্যতিত অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছাড়া আইনের কঠোর বাস্তবায়ন অসম্ভব।

পাঁচ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে সংঘাত-সংঘর্ষে ও হতাহতের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘নির্বাচনী সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের প্রতিঘাত আরো জোরদার করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সন্ত্রাসের কারণ অনুসন্ধান করে তা থেকে অব্যাহতির উপায় উদ্ভাবন অপরিহার্য। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রথা উঠিয়ে না দিলে সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা অবশ্যই সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন চাই।’

কয়েকটি এলাকায় নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন,‘নির্বাচনের মৌলিক শর্ত ভোটের আগে ও পরে ব্যালট পেপারের নিরাপত্তা বিধান। আমরা যথাযথভাবে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর দায় এড়াতে পারবে বলে মনে হয় না। যেকোনো মূল্যে ব্যালট পেপারের সুরক্ষা দিয়ে এই অবস্থার অবসান ঘটানো প্রয়োজন। স্মরণযোগ্য যে, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব রাতে ব্যালট পেপারের ঘটনাটি বিবিসি প্রকাশ করার পর নির্বাচন কমিশন দিনের ভোট রাতে করে বলে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হই। এটি কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।

অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘মানবাধিকারের আলোচনা এখন তুঙ্গে। মানবাধিকার উৎসারিত হয় ভোটের অধিকার থেকে। আমাদের সংবিধানের স্পিরিটই হচ্ছে তাই। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও রক্ষা করা এখনও সুদূরপরাহত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। একমাত্র নির্ভেজাল গণতন্ত্রই মানবাধিকারের গ্যারান্টি দিতে পারে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও এর প্রতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’

পুর্বপশ্চিম/ এফএইচ

ইউপি নির্বাচন,উৎসবের বদলে,বিষাদের করুণ সুর
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close