• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার পেলেন বিপ্রদাশ বড়ুয়া ও সাদিয়া সুলতানা

প্রকাশ:  ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:০৪
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

সাহিত্যে অবদানের জন্য এবার কথাসাহিত্যিক ও প্রকৃতিপ্রেমী বিপ্রদাশ বড়ুয়া এবং ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ঔপন্যাসিক সাদিয়া সুলতানা রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।

বুধবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে রাবেয়া খাতুন কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০২৩–এর পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন একাডেমির মহাপরিচালক ও জুরি বোর্ডের সভাপতি কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। পরে তিনিসহ অতিথিরা পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে (বিপ্রদাশ বড়ুয়া চিকিৎসার জন্য ভারতে থাকায় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত) ক্রেস্ট, সনদ ও পুরস্কারের অর্থমূল্যের চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে রাবেয়া খাতুনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের নামে গত বছর এ সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করে বাংলা একাডেমি। রাবেয়া খাতুন স্মৃতি পরিষদের তহবিল থেকে পুরস্কারের অর্থ দিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

অনুষ্ঠানে বিপ্রদাশের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন সুজন বড়ুয়া। পুরস্কার হিসেবে বিপ্রদাশ বড়ুয়া পেয়েছেন দুই লাখ টাকা আর সাদিয়া সুলতানা পেয়েছেন এক লাখ টাকা।

বিচার বিভাগে কর্মরত সাদিয়া সুলতানা তাঁর ‘বিয়োগ রেখা’ উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি বলেন, ‘কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে নিজের নাম জড়িয়ে যাওয়া অনেক বড় পাওয়া। রাবেয়া খাতুনের সন্তানেরা মায়ের স্মৃতিকে যেভাবে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন, তাতে বলা যায় তিনি লেখক ও মা—দুই ক্ষেত্রেই সার্থক।’

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ৫০–এর দশক থেকে সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত হন রাবেয়া খাতুন। ঘটনা, গল্প, বাস্তবতা, সৃষ্টিশীল কল্পনায় রাবেয়া খাতুনের সাহিত্যে সমাজের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যেত। রাবেয়া খাতুনের পরিবারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে বাংলা একাডেমি তাঁর রচনাসমগ্র প্রকাশে উদ্যোগ নেবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। তিনি বাংলা একাডেমি এবং রাবেয়া খাতুনের পরিবারের সদস্যদের যৌথ উদ্যোগে যে পুরস্কারটি দেওয়া হচ্ছে, তাকে অনন্য উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাবেয়া খাতুনের ছেলে বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর মায়ের বিভিন্ন স্মৃতিচারণা করেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, লেখক রাবেয়া খাতুনকে যেভাবে জানা উচিত ছিল, তা তিনি জানতে পারেননি। রাবেয়া খাতুনের রেখে যাওয়া বিভিন্ন স্মৃতিস্মারক ও লেখার মাধ্যমে নতুন করে তাঁকে আবিষ্কার ও অনুভব করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

রাবেয়া খাতুন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম রাবেয়া খাতুন ফাউন্ডেশন তৈরির উদ্যোগের কথা জানান। তিনি রাবেয়া খাতুনের লেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. হাসান কবীর।

রাবেয়া খাতুন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি মারা যান। তিনি লিখেছেন উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথা। তাঁর লেখা থেকে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ও নাটক। পঞ্চাশের দশকে এই অঞ্চলের মুসলিম নারীদের জীবন যখন নানা বিধিনিষেধের বেড়াজালে বন্দী, তেমন সময়ে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন একজন লেখক হিসেবে। রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা, সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন।

সংস্কৃতি,সাহিত্য
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close