• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাহিত্য চর্চার আড়ালে নিষিদ্ধ পর্নগ্রাফির কারিগর টিপু কিবরিয়া

প্রকাশ:  ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২৪ | আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৩১
নিজস্ব প্রতিবেদক

একসময় সেবা প্রকাশনী পত্রিকার সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন টিপু কিবরিয়া। শিশুসাহিত্যিক ও আলোকচিত্রী হিসেবে কুড়িয়েছেন নাম-যশ। বেশ কয়েকটি ছড়ার বই ছাড়াও ‘হরর ক্লাব’ নামে শিশুদের জন্য সিরিজ বই লিখেছেন তিনি। আদতে তার পরিচয় সুনামের মনে হলেও আড়ালে তিনি ভয়ঙ্কর ও বিকৃত মানসিকতার। টিপু কিবরিয়া বাংলাদেশে বসে আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ভয়ংকর এ অপরাধে জড়িত থাকার কারণে অনেক দেশে তিনি শিশু পর্নোগ্রাফি অপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত।

শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি ও পাচারের অপরাধে ২০১৪ সালের জুনে ইন্টারপোলের তথ্যের ভিত্তিতে টিপু কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তখন ওই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়। ওই মামলার অভিযোগ প্রমানিত হয়ে ৬ বছর কারাবাস করেছেন তিনি। পরে ২০২১ সালে কারামুক্ত হন টিপু কিবরিয়া।

এরপরও বিকৃত মানসিকনার পরিবর্তন হয়নি তার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন টিপু কিবরিয়া। তবে একই অপরাধে যুক্ত থাকায় দায়ে গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে টিপু কিবরিয়া ও তার সহযোগী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের একটি টিম।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, টিপু কিবরিয়ার বাসায় থেকে ক্যামেরা পিসি, ক্লাউড স্টোরেজ থেকে প্রায় ২৫ হাজারের মতো শিশুর পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা ছবি, ও এক হাজারের মতো ভিডিও কনটেন্ট পাওয়া গেছে। শিশু পর্নোগ্রাফির জন্য ভুক্তভোগী শিশুদের সবাই ছিন্নমূল পথশিশু।

তিনি বলেন, রাজধানীর গুলিস্তান, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পথশিশুদের পর্নোগ্রাফির কাজে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে যুক্ত করা হয়। তার বাসায় পর্নোগ্রাফির ভিডিও এডিটিং প্যানেলও রয়েছে। সেখানে তিনি এডিটিং করে ভিডিও কনটেন্ট ক্লায়েন্টদের মেইলে পাঠাতেন। যা পরে বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হতো।

তিনি আরও বলেন, আগে তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতেন। পরবর্তীতে মেগা ও টোটেনা নামক দুটি এনক্রিপটেট অ্যাপসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের কাছে পর্নোগ্রাফির কনটেন্টগুলো পাঠাতে শুরু করেন। কিবরিয়ার কাছ থেকে যে ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ আরো অনেক দেশের গ্রাহকদের তালিকা পাওয়া গেছে। যাদের কাছে তিনি বিকৃত, অশ্লীল পর্নোগ্রাফির ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন।

তার কাছ থেকে উদ্ধার সব ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থেকে ফরেনসিক করে আমরা এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার অশ্লীল ছবি ও ১০০০ ভিডিও পেয়েছি। ফরেনসিক বা ফিল্টারিং এর কাজ শেষ হলে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

টিপু কিবরিয়া,শিশুপর্ন,পাচার
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close