• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘আমি বাঁচতে চাই, মানুষরূপী নরপশু আলমাস আমাকে ছিঁড়ে খাচ্ছে’

প্রকাশ:  ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৫৮
গফরগাঁও প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার আউট বাড়িয়া গ্রামের হত দরিদ্র রিক্সা চালক শাহাব উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা আক্তার নিপা কান্না জরিত কণ্ঠে বলেন, 'আমি বাঁচতে চাই, আমাকে আপনারা বাঁচান, মানুষরূপী নরপশু আলমাস আমাকে ছিঁড়ে খাচ্ছে'।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে গফরগাঁও প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আকুতি মিনতি করে জানান ফাতেমা আক্তার নিপা। লিখিত বক্তব্যে ফাতেমা আক্তার নিপা তার নির্যাতিত জীবনের বর্ণনা দেন।

লিখিত বক্তব্য তিনি জানান, ফাতেমা আক্তার নিপা ২০০৪ সালে ঢাকার সাভার হেমায়েতপুর এলাকায় স্টার এসোসিয়েট লিমিটেড নামে একটি পোশাক কোম্পানিতে চাকরি করতে যান। এ সময় হেমায়েতপুর পূর্বহাটী গ্রামের আরজ আলী মেম্বারের ছেলে ঝুট ব্যবসায়ী আলমাস মোল্লার দৃষ্টি পড়ে নিপার ওপর। পোশাক কোম্পানিতে আসা যাওয়ার পথে আলমাস নিপাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করার অভিযোগ করা হয় তাকে।

এতে নিপা রাজি না হওয়ায় হুমকি দেয় আলমাস। এ ঘটনা বাবা মাকে জানালে তারা নিপাকে নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় বিয়ে দিয়ে দেন। এতে আলমাস আরও ক্ষীপ্ত হয়ে নিপা ও তার স্বামীর নামে সাজানো মিথ্যা মামলা করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করায়। পরে পুলিশ নিপাকে ছেড়ে দিলেও তার স্বামীকে ছয় মাস হাজতবাস করতে হয়। এতে নিপার সংসারটি ভেঙে যায়। পরে গফরগাঁওয়ের কালাইরপাড়-জালেশ্বর গ্রামে নিপাকে পুনরায় বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে আলমাস মোল্লার সাজানো মামলায় নিপার দ্বিতীয় স্বামীকেও পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলে নিপার এ সংসারটিও ভেঙে যায়।

এ অবস্থায় আলমাস মোল্লা ফোনে যোগাযোগ করে নিপাকে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়ে ঢাকায় দেখা করতে বলে। নিরুপায় হয়ে ঢাকায় আলমাস মোল্লার সাথে দেখা করতে গেলে নিপাকে জোর করে হেমায়েতপুর পূর্বহাটী নিয়ে প্রায় তিন মাস আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়।

নিপার মা সাবিনা খাতুন বলেন, বাবাগো আমরা খুব গরীব মানুষ। আলমাস আমার মায়ার জীবনডা ধ্বংস কইরা দিছে। অহন পিছ ছাড়ছে না। হুমকি দিতাছে। আল্লায় জানে কি অইব।

ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল আলম খোকন বলেন, এটি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। মেয়েটির দুইটি সংসার ভেঙেছে। দীর্ঘদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করার অভিযোগ রয়েছে। এর প্রকৃত বিচার হওয়া উচিত। আমরা মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছি।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেশমা আক্তার বলেন, নিপা যাতে বিচার পায় সে জন্য যেখানে যাওয়া উচিত আমরা যাব। আলমাসের মতো জঘন্য অপরাধীদের বিচার না হলে আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেশমা আক্তার, ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হক ঢালী, শামছুল আলম খোকন, আব্দুল্লাহ আল আমিন বিপ্লব, সাহাবুল আলম, নির্যাতিতার মা সাবিনা খাতুন এবং ভাই রুবেল।

ওএফ

বাঁচতে চাই,ধর্ষণ,কিশোরী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close