• বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পরিবেশবান্ধব ইউনি ব্লক ইটের ছোঁয়ায় পাল্টে যাচ্ছে নওগাঁর রাস্তার দৃশ্যপট

প্রকাশ:  ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৯
আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি

পরিবেশবান্ধব, আধুনিক ও দামী ইউনি ব্লক ইটের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে নওগাঁর ৮টি উপজেলার গ্রামীণ রাস্তার দৃশ্যপট। শুধুমাত্র শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে ব্যবহৃত হওয়া দামী ইউনি ব্লক ইটের রাস্তা পেয়ে অনেক খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। ভবিষ্যতে ধীরে ধীরে সকল গ্রামীণ রাস্তাগুলো পরিবেশবান্ধব এমন ব্লকের ইটের মাধ্যমে পুন:নির্মাণ করা হবে বলে জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ।

নওগাঁ এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনকে বাস্তবায়ন করতে এবং শহরের সুবিধা গ্রামে পৌছে দিতেই দেশের প্রতিটি উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাগুলো মূল্যবান পরিবশেবান্ধব ইউনি ব্লক ইট দিয়ে পুন:নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৫সালের মধ্যে দেশের যত্রতত্র গড়ে ওঠা ক্ষতিকর ইটভাটার দৌরাত্ম বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর গ্রহণ করা এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপকে প্রাথমিক ভাবে নওগাঁয় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই জেলার রাণীনগর উপজেলার ৪টি, বদলগাছী উপজেলার ৩টি, মহাদেবপুর উপজেলার ১টি, মান্দা উপজেলার ৩টি, নিয়ামতপুর উপজেলার ১টি, পত্নীতলা উপজেলার ২টি, নিয়ামতপুর উপজেলার ১টি ও সাপাহার উপজেলার ৭টি মোট ২৪টি গ্রামীণ রাস্তার ৩২.১৬কিলোমিটার ইউনি ব্লক ইট দিয়ে পুন:নির্মাণ করা হয়েছে।

যেহেতু এমন ইট শুধুমাত্র শহর কেন্দ্রিক বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা হয়েছে তাই গ্রামের মানুষের কাছে এই ইট অনেক দামী ও নতুন মনে হওয়ায় অনেকেই এই দামী ইট নিয়ে বাড়িতে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া অনেক সময় গ্রামীণ রাস্তার দুই পাশের শোল্ডারে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটি (ধার) না থাকায় বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে ধ্বসে যেতে পারে বিশেষ করে পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এমন ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তাই ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া এমন ইউনি ব্লকের রাস্তা দ্রুত মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে পর্যাপ্ত ইউনি ব্লকের ইট মজুদ রাখা এবং পরিবহনের জন্য বাহনের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। তা না হলে ব্লকের রাস্তার কোন স্থানে নষ্ট হলে তা সঙ্গে সঙ্গে মেরামত করা না হলে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। তাই আগামীতে রক্ষণাবেক্ষণের এমন পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করে গ্রামীণ রাস্তাসহ যে কোন রাস্তা কিংবা সড়ক দামী ইউনি ব্লক ইট দিয়ে পুন:নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করলে তা অনেক দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং সরকারের গৃহিত ভিশন শতভাগ সফল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাণীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন আমরা কখনো এমন ইট দেখিনি। কিন্তু এখন আমাদের এই গ্রামীণ রাস্তাটি এমন দামী ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা অনেক খুশি যে এমন দামী ইট দিয়ে তৈরি করা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছি। ব্লকের রাস্তায় পাকার মতো উঠে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাও নেই। তাই রাস্তাটি সহজে নষ্ট হবে না। শহরের সুবিধা আমাদের গ্রামে পৌছে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ ধন্যবাদ।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইসমাইল হোসেন বলেন ইউনি ব্লকের ইট বার বার ব্যবহার যোগ্য। সহজে নষ্ট হয় না। ফলে কোন ব্লকের সড়ক যদি ভেঙ্গে যায় কিংবা ধ্বসে যায় তাহলে কোন ঝামেলা ছাড়াই ব্লকের ইট পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব। ব্লকের ইট ভাটায় পোড়ানো ইটের চেয়ে শতগুন শক্তিশালী এবং সহজে নষ্ট কিংবা ভেঙ্গে যায় না। এছাড়া ব্লকের ইট তৈরি করতে মাটির প্রয়োজন হয় না। তাই যে কোন অবকঠামো উন্নয়নে যদি ব্লকের ইট ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যায় তাহলে ইটভাটার হাত থেকে কৃষি জমির মাটি যেমন রক্ষা পাবে তেমনি ভাবে পরিবেশ ও মানুষও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। এমন সকল বিষয়কে পরিকল্পনার মধ্যে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ পর্যায়ে ব্যয়বহুল ব্লকের ইট ব্যবহার করার যে নিদের্শনা প্রদান করেছেন তা আমরা শতভাগ বাস্তবায়ন করার চেস্টা করছি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন সরকারের এমন পদক্ষেপ নি:সন্দেহে আগামীর জন্য মাইলফলক। ইউনি ব্লক ইটের কাজ জেলায় সম্পন্ন নতুন হলেও আমরা চেষ্টা করেছি প্রকল্পের প্রতিটি কাজ শতভাগ যত্ন সহকারে শেষ করার।

তবে এমন দামী ইটের কাজ যদি গ্রামীণ রাস্তার পাশাপাশি ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই শহর কেন্দ্রিক এমন বিভিন্ন সড়ক, প্রতিটি উপজেলা প্রশাসন চত্বর ও সরকারি বিভিন্ন অফিসের চত্বরের রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা যায় তাহলে সরকারের গৃহিত প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ ফলাফল আরো অনেক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আগামীতেও নওগাঁর অন্যান্য উপজেলাতেও এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলেও তিনি জানান।

নওগাঁ,সড়ক পথ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close