• শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মামলার খরচ ও নেশার টাকা জোগাড় করতে তপুকে খুন

প্রকাশ:  ২৫ জুন ২০২৪, ১৯:২২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

পাবনায় ঈশ্বরদীতে আগের মামলার খরচ, ছাত্রাবাসের বকেয়া এবং মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করতে বন্ধু তপুকে (১৫) অপহরণ করে হত্যা করেছে অপর তিন বন্ধু জয়, ঈসা ও সোহেল।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী।

তপুকে হত্যা করে মরদেহ আটকে রাখা হয়েছিলো টিনের বাক্সে। নিজেদের আড়াল করতে হত্যাকারীরা নেয় নানা কৌশল। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হলো না। হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু ও মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া এলাকার জয়নাল আবেদীন জয় (২০) এবং ঈশ্বরদী পৌর সদরের মশুরিয়াপাড়া এলাকার ঈসা খালাশি (১৯)। এ ঘটনায় সোহেল নামের আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। নিহত তপু হোসেন মশুরিয়াপাড়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। সে স্থানীয় একটি ওয়ার্কশপে (কারখানায়) মিস্ত্রির সহকারি হিসেবে কাজ করতো।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ জুন দুপুরে ঈশ্বরদীর মশুড়িয়াপাড়ার কিশোর তপু নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর অপহরণকারীরা কিশোর তপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তপুর বাবাকে ফোন করে তপুকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ৭ হাজার টাকা দেওয়ার পরও তপুর খোঁজ না পাওয়ায় তপুর মা মজিরন বেগম বাদি হয়ে পরদিন ১৬ জুন ঈশ্বরদী থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মূল আসামিদের সনাক্ত করা হলেও তপুর সন্ধান পাচ্ছিল না পুলিশ।

নিখোঁজের আটদিন পর গত ২২ জুন মশুড়িয়াপাড়ায় অরন্য ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলায় একটি টিনের বাক্স থেকে তপুর অর্ধগলিত রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর ঢাকায় পালানোর সময় পাবনা শহরের ঢাকাগামী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রধান অভিযুক্ত জয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশকে জানিয়েছে তারা ঈশ্বরদী কলেজের পেছনে অরন্য ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকত। ভুক্তভোগী তপুর বাড়ি ছাত্রাবাসের পাশেই হওয়ায় এক সঙ্গে তারা ফ্রি ফায়ার গেম খেলতো, আড্ডা দিতো ও ধূমপান করতো। জয় ইতোপূর্বে আতাইকুলা থানায় একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় মামলার খরচ, ছাত্রাবাসের খরচ এবং মাদক সেবনের জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সোহেল ও ঈসার সাথে অপহরণের পরিকল্পনা করে।

সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কৌশলে তপুকে ছাত্রাবাসে ডেকে এনে জিম্মি করে। তপু আতঙ্কে চিৎকার শুরু করলে তারা চাকু দিয়ে তাকে হত্যা করে এবং বেল্ট দিয়ে তার হাত বেঁধে একটি বাক্সে ভরে রাখে। পরবর্তীতে আসামি জয় ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার বাবার কাছে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে।

গত ২২ জুন দুপুরে অরন্য ছাত্রাবাসের তৃতীয় তলায় সন্দেহভাজন আসামি জয় এর কক্ষ থেকে উৎকট গন্ধ আসতে থাকে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় নিখোঁজ তপুর পিতামাতাকে খবর দেওয়া হয়। মেসের মালিকসহ আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে কক্ষটির তালা ভেঙে টিনের বাক্সের ভেতর থেকে অর্ধগলিত রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। নিখোঁজ তপুর বাবা-মা লাশটি তাদের ছেলে তপুর বলে সনাক্ত করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সোমবার (২৪ জুন) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হত্যা,অপহরণ,গ্রেপ্তার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close