• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

জলাবদ্ধতায় পাঁচশ একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা

প্রকাশ:  ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩০
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় পাঁচশ একর বোরো জমির পাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় কালাতিপাত করছেন কৃষকরা। দ্রুততার সঙ্গে হাওরের শান্তিগঞ্জ উপজেলা অংশের আস্তমা-আসামপুর গ্রাম সংলগ্ন উথারিয়া ক্লোজারের পানি নিষ্কাশনের পাইপ খুলে দেওয়া না হলে ধান তলিয়ে যাবে।

জেলার অন্যতম বৃহৎ দেখার হাওর। এই হাওরে সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষাধিক কৃষকের ২৪ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে দেখার হাওরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উথারিয়া বাঁধে ডিজেলচালিত পাঁচটি পাওয়ার পাম্প বসিয়ে দেখার হাওরের জলাবদ্ধতার পানি সেচ দিয়ে মহাসিং নদীতে ফেলা হচ্ছে। অপরদিকে কোমর পরিমাণ পানিতে নেমে নিজের ডুবে যাওয়া কাঁচা ধান কাটছেন একাধিক কৃষক। অনেক জমির পাকা ধান পানির নিচে ডুবে আছে, কাঁচা ধানের শীষ ভেসে আছে অনেক জমিতে।

ইতোমধ্যে বাঁধের ক্লোজার অংশ পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ। সার্বিক দিক আলোচনা করে করণীয় ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও উথারিয়া বাঁধে ডিজেলচালিত পাঁচটি পাওয়ার পাম্প বসিয়ে দেখার হাওরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার পানি সেচ দিয়ে মহাসিং নদীতে ফেলা হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, সম্প্রতি বৃষ্টিতে দেখার হাওরের রৌয়া কিত্তা, ডৌক্কা কিত্তা, সুগানি কিত্তা, পাটনী কিত্তা, বাউয়ানী কিত্তা, গোজাউনী বাঁধের কাছের অংশ, লোহাকুচিসহ বেশকিছু অংশের প্রায় পাঁচশ একর বোরো জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পাওয়ার পাম্প দিয়ে যেভাবে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে এভাবে এক মাসেও জলাবদ্ধতার পানি শেষ হবে না। জলাবদ্ধতার কারণে এসব জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কৃষকরা আরও জানান, উথারিয়া বেড়িবাঁধে একটি ক্লোজারে পানি নিষ্কাশনের জন্য ১২ ইঞ্চির ৩টি পাইপ বসানো আছে। অনেক বছর ধরেই এই তিনটি পাইপ দিয়ে হাওরের জলাবদ্ধতার পানি মহাসিং নদীতে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু এ বছর এসব পাইপের মুখে মাটি ফেলে পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। ফলে হাওরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে শত শত কৃষকের কষ্টের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। দ্রুততার সাথে যদি এইসব পাইপের মুখ খুলে দেওয়া না হয় তাহলে অনেক কৃষকই শেষ হয়ে যাবেন।

দেখার হাওরের কৃষক আজিমুল হক, জিল্লুর রহমান, ফজল উদ্দিন ও তখলুছ মিয়া বলেন, ১০-১৫ বছর ধরে এসব পাইপ দিয়ে হাওরের জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন হয়। এত বছর কোনো সমস্যা হয়নি। এ বছর পিআইসি সভাপতি রাজা মিয়া বাঁধের কাজ করানোর সময় দুই পাশেই পাইপের মুখ বন্ধ করে দেন। পানি নিষ্কশনের পথ না থাকার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষকের শত শত একর জমি হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশন করার দাবি জানাচ্ছি।

উথারিয়া বাঁধের পিআইসি সভাপতি রাজা মিয়া বলেন, পাইপের মুখ ভাঙা থাকার কারণে বন্ধ করেছি। এদিকে পাইপ খোলা থাকলে পানির স্রোতে বাঁধ ধসে যাওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। এই আশংকা থেকে পাইপের মুখ বন্ধ রেখেছি।

শান্তিগঞ্জ ইউএনও সুকান্ত সাহা বলেন, আমরা বাঁধ পরিদর্শন করেছি। কৃষকদের কথা শুনেছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।

বাঁধ পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ বলেন, আমরা পরিদর্শন করেছি। কৃষকের সমস্যাটি পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি। গুরুত্বসহকারে আজ সন্ধ্যায় মধ্যেই জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করব। এই জলাবদ্ধতা কমাতে হাওরের অন্যান্য ফসলের যেন ক্ষতি না হয় সেই প্রস্তুতি নিয়ে আমরা পানি নিষ্কাশনের দিকেই এগুবার চেষ্টা করব।

সুনামগঞ্জ,পানি নিষ্কাশন,জলাবদ্ধতা,বোরো ধান

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close