• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

শ্রীমঙ্গলের হাওর ও বিলে পাখি শিকারিরা বেপরোয়া

প্রকাশ:  ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও থেমে নেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল হাইল হাওর হাওরের বিলে পাখি শিকার। শিকারিবার নানা কৌশল অবলম্ভন করে শিকার করছে দেশি বিদেশী পাখি। খাবারের সাথে টুপ বানিয়ে বিষ মিশিয়ে হাওরে এবং বিলে ফাঁদ পেতে রাখা হয়। এসব বিষটুপ খেয়ে মারা যাচ্ছে অতিথি, পরিযায়ীসহ নানান প্রজাতির পাখি।

শিকারের এই চিত্র প্রতিনিয়তই দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল হাইল হাওর এবং বাইক্কা বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে। আর এসব পাখি উচ্চ মূল্যে নানা কৌশলে বিক্রি করছে শিকারিরা। প্রতি বছরের মতো এবারের শীত মৌসুমে এই অঞ্চলে পাখি শিকারিদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। তবে বিলের সৌন্দর্য্য রক্ষায় বাইক্কা বিল প্রকল্প চালু, বিল খনন করাসহ বিলের আয়তন বৃদ্ধির দাবি উঠেছে। পাশাপাশি রক্ষনাবেক্ষনে চরম অবহেলার পাশাপাশি মাছের জন্য বিখ্যাত বাইক্কাবিলে অবৈধ ভাবে পাখি শিখারীদের দৌরাত্বা বন্ধ না হওয়ায় বাইক্কাবিল সৌন্দয যেমন হারাচ্ছে তেমনি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

জানাযায়, সম্প্রপ্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকা থেকে খাজা মিয়া নামে এক পাখি শিকারিকে বেশ কিছু পরিযায়ী পাখি ও পাখি ধরার সরঞ্জামসহ আটক করা হয়। এসময় তাকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়াও মৌলভীবাজারের থানা বাজার এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ৮টি পাখিসহ আটক আব্দুস শহীদকে ১৫ দিনের কারাদন্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালাত। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। হাইল হাওর এলাকার বাসিন্দা সফল মিয়া জানান, হাইল হাওরের পাশাপাশি বিলের এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর ও হাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় শিকার করা পাখি বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব বলেন, 'অবাধ শিকারের কারণে পাখিদের পরিসর যেমন সীমিত হয়ে আসছে, তেমনি হুমকির মুখে পড়ছে এর প্রজনন ও আবাস্থল। অতিথি পাখির আগমনের এ সময়টিতে শিকারিরা বেশি সক্রিয় থাকে।'

হাওর-বিলের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকা থেকে শিকার করা পাখি খুব গোপনে বিক্রি হয় জানিয়ে মৌলভীবাজার পরিবেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ মহসীন পারভেজ বলেন, 'গ্রামের অনেক মানুষ এখনো জানে না যে পাখি শিকার নিষিদ্ধ এবং বেআইনী। তাই এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি শিকার বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালাতে হবে। শ্রীমঙ্গল বাইক্কা বিল বড়গাঙ্গিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠনের সভাপতি পিয়ার আলী জানান, বাইক্কা বিলের মাছ রক্ষার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারাই পাখিদের নিরাপধে রাখার চেষ্টা করেন। পাখির নিরাপত্তার সার্থে সরকারীভাবে পাহারাদার বাড়ানো হলে পাখি শিকার কমে আসবে।

সার্বিক বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। 'পাখি শিকারিদের বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বন বিভাগের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সচেতনতা কার্যক্রমও চালিয়ে আসছেন তারা। তারপরও তেমন সুফল মিলছে না।

বিল -হাওর,অতিথি পাখি,পাখি শিকার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close