• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

যশোরে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে বোরো আবাদ

প্রকাশ:  ২১ মার্চ ২০২২, ১৫:২১
যশোর প্রতিনিধি

যশোরের মনিরামপুরে বোরো আবাদের যত্ন নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। চলতি বছরে এ উপজেলায় বোরো আবাদ লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছে। গেল ২-৩ বছর ধান ও চালের দাম চড়া হওয়ায় অন্য চাষ ছেড়ে বোরো চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষকরা।

চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে উপজেলার দু একটি মাঠে মাজরা ও ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হচ্ছেন চাষি। নানা বালাইনাশক ব্যবহার করেও তারা ফসল রক্ষা করতে পারছেন না। তবে সার্বিকভাবে অন্য বারের তুলনায় ধানে এবার তেমন কোন রোগবালাই দেখা যাচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে রেকর্ড পরিমাণ ফলনের আশা করছেন চাষিরা।

এদিকে রোগবালাই কম থাকলেও এবার সারে বাড়তি খরচ লাগছে কৃষকের। বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় তারা সরকার নির্ধারিত দামে সার পাচ্ছেন না। অধিক মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দামে সার বিক্রি করছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসূমে ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। যার অর্জিত হয়েছে ২৬ হাজার ৯০০ হেক্টর। কৃষি অফিসের হিসেবে লক্ষমাত্রা ছুঁতে আরও বাকি ৬০০ হেক্টর। জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলার হরিদাসকাটি, পাঁচবাড়িয়া, হোগলাডাঙা, মাছনা, ভরতপুর, দূর্বাডাঙা, বাজিতপুর, খাটুয়াডাঙা, সাতগাতী, পোড়াডাঙা, কুলটিয়া, পাঁচাকড়ি, বালিদা, নেহালপুর, খাকুন্দি, মনোহরপুর, কপালিয়া মোট ১৭টি বিলের ৭৯৫ হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে এবার বোরো চাষ হয়নি।

জানা গেছে, বিলগুলোর অধিকাংশ এলাকায় কৃষকদের নিজ উদ্যোগে পানি সরিয়ে বোরো আবাদ হয়েছে। যা গতবারের উৎপাদনের চেয়ে বেশি।

উপজেলার রোহিতা গ্রামের চাষি গৌতম দাস বলেন, চার বিঘা বোরো চাষ করেছি। দেড়বিঘা জমিতে ইঁদুর হানা দিয়েছে। ইঁদুর ধান গাছ গোড়া থেকে কেটে দিচ্ছে। বারবার ব্যবস্থা নিয়েও কোন প্রকার ইঁদুর দমন করা যাচ্ছে না।

মামুদকাটি গ্রামের মতিয়ার রহমান বলেন, ইজারা নিয়ে ১০ বিঘা বোরো চাষ করেছি। বিলের তিন বিঘা জমিতে ইঁদুর ও মাজরা পোকা হানা দিয়েছে। দুই বিঘায় মাজরা যেভাবে লেগেছে তাতে জমিতে কাচি নেওয়া লাগবে না বলে মনে হচ্ছে। বারবার বালাই নাশক ছিটিয়ে পোকা দমন করা যাচ্ছে না। কোনো ওষুধ ইঁদুর খাচ্ছে না। মাঠের অনেক কৃষক আমার মত ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় কৃষি অফিসের কাউকে আমরা কাছে পাচ্ছি না। তাছাড়া এবার বেশি দামে সার কিনতে হয়েছে। বোরো ধানের এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ২-৩ বছর লেগে যাবে।

রোহিতা শেখপাড়া মাঠের চাষি নাজিম উদ্দিন বলেন, সাড়ে ৪ বিঘা বোরো চাষ করেছি। আমাদের মাঠে ধানে তেমন কোন রোগবালাই নেই। ধান গাছের লক্ষণও ভাল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার খুব ভাল ফলনের আশা করছি।

খেদাপাড়া ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, টুকটাক মাজরার আক্রমণের খবর পাচ্ছি। তবে সেটা মাত্রায় খুব কম। আমাদের পরামর্শে কৃষকরা বালাইনাশক ব্যবহার করে ভাল ফল পাচ্ছেন। ইঁদুরের উৎপাতের খবর এবার পাইনি। যদি কোন খেতে ইঁদুর লাগে তাহলে আমরা 'রোমা' নামে এক ধরণের কেক ব্যবহারের পরামর্শ দিই। যা ইঁদুরের খুব পছন্দের।

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত বোরো আবাদে কোন রোগবালাই দেখা দেয়নি। আবহাওয়া যা আছে তা বোরো চাষের উপযোগী। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে বোরোর ভাল ফলন হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এএইচ/জেএস

মনিরামপুর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close