• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দানব সরকার জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ:  ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৪৭
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ক্ষমতাসীন সরকার ভিন্নভাবে একদলীয় শাসন চালু করেছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- দেশের অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা সবকিছু ধ্বংস করা হয়েছে। দানব সরকার জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে।

শনিবার (৬ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিগত আন্দোলনে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এ ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইফতারের আগে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার ৬৪ জন নেতাকর্মীর পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি ভয়ংকর দানবের আক্রমণ চলছে আমাদের ওপর। ঢাকা মহানগর বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে কারাবন্দি অবস্থায়। তারপরও আমাদের আন্দোলন চলছে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য নষ্ট করা হয়েছে। ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনমত ছাড়াই একটি সরকার ক্ষমতায় আছে; যারা জাতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে।

তিনি বলেন, আমাদের অসংখ্য ছেলেদের পঙ্গু করা হয়েছে। বিনা কারণে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের ৬০ লাখ নেতাকর্মী ও মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর ঘিরে ২ দিনে বিএনপির ৩৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দেশের মানুষ ঠিকমতো বাজার করতে পারে না। তবুও কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতাশ নন। তারা সঠিকভাবে কর্মসূচি ও দিকনির্দেশনা চান। তাহলে আবারও অতীতের মতো গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা এ পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহর কাছে নাজাত কামনা করি। আল্লাহ যেন আমাদের গুনাহ যেন মাফ করে দেন। তিনি যেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হিসেবে বেঁচে থাকার তৌফিক দেন। এ দানব সরকার থেকে যেন মুক্তি দেন। এ আন্দোলন হলো জাতির মুক্তির আন্দোলন। এ দখলদার সরকারকে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আমরা সফল হবো ইনশাআল্লাহ।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ঢাকা মহানগর হলো আন্দোলন সংগ্রামের জন্য। আমি আহ্বান জানাব আসুন আপনার ঢাকা মহানগরীতে বিএনপির সংগঠনকে আরও শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলুন, যাতে বিএনপির জন্য দুর্ভেদ্য হিসেবে শক্তিশালী হয়। এ দুর্গ যেন কেউ ভাঙতে না পারে, সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। এখন সংগঠনের প্রতি সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশ করতে হবে। শর্টকাট পদ্ধতিতে কখনো কিছু হয় না। আজকে ফেরাউন, নমরুদ, হিটলারের মতো কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো যখনই এসেছে তখনই তারা ভেবেছে চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু আসুন আমরা সকলে শপথগ্রহণ করি যেন আমরা সবখানেই তাদের পরাজিত করতে পারি।

অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য জেলখানা সেকেন্ড হোম। আজকে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা জানেন না তারা জীবিত না কি মৃত। যার কারণে পারিবারিক সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চাই। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কারও সঙ্গে আপস করে না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। সেই আপসহীন নেত্রী যখন বন্দি, তখন গণতন্ত্রও বন্দি। আজকে অন্যায় না করে জেলে যেতে হয়, খুন হতে হয়। সিপাহিদের হাতে মার খেতে হয়।

মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবেদিন, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, গুম হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের পুত্র আবু সাদাত চৌধুরী ইমন, নিহত পারভেজ হোসেনের মেয়ে রিমি, সাজেদুল হক সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি এবং আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রাইসা।

অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, যুগ্মমহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় জেড রিয়াজ উদ্দিন নসু, তাইফুল ইসলাম টিপু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শাম্মী আক্তার, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নাজমুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)-এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের সাবেক আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, সাবেক সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদার, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, মহানগর বিএনপির আবদুস সাত্তার, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, এ জি এম শামসুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন, হাজি মনির হোসেন (চেয়ারম্যান), মোশাররফ হোসেন খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি, সাইদুর রহমান মিন্টু, এ বি এম রাজ্জাক, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন, নাদিম চৌধুরীসহ বিভিন্ন স্তরের কয়েকশ নেতাকর্মী।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,লেডিস ক্লাব,ইফতার,খালেদা জিয়া
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close