• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচীর অনুষ্ঠান, যা বলল ডিএমপি

প্রকাশ:  ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

পহেলা বৈশাখে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে ৬টার পর রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠান করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। একইসঙ্গে তারা সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিবৃতিও দেয়। এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার ( ১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কে এন রায় নিয়তির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা সংক্রান্ত সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার বিষয়টি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও বিব্রতকর।”

ডিএমপি বলেছে, খুব স্বাভাবিকভাবেই নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কর্তব্য। পুলিশের এই নিরাপত্তা কার্যক্রমে সকল জনগণ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন এটাই কাম্য যেন আনন্দের এই অনুষ্ঠান বিষাদে পরিণত না হয়ে যায়। নিরাপত্তা বিধানে প্রদত্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না মেনে তার বিরোধিতা করে অনুষ্ঠান করা খুবই দুঃখজনক এবং উদীচীর মতো প্রগতিশীল একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নিকট থেকে যা কখনো কাম্য নয়।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পহেলা বৈশাখ বাংলা ও বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। সব ধর্মের মানুষের কাছে এটি একটি সর্বজনীন উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবারই উৎসব উদযাপনে থাকে বিশেষ প্রস্তুতি। বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক যেন এই দিনটি। বিশেষত দিনটি রঙিন হয়ে ওঠে বাঙালি পোশাকে-আশাকে, আয়োজনে এবং আপ্যায়নে। কিন্তু ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে বাংলা সংস্কৃতির ধারক এই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ওপর উগ্রবাদী আঘাত এসেছে। বারবার চেষ্টা করা হয়েছে সংস্কৃতি যাত্রাকে ব্যাহত করার।”

এতে বলা হয়, “উগ্রবাদের এই ভয়াল থাবা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ করেছে, আঘাত করেছে সৃজনশীল ও সংস্কৃতমনা মানুষদের। উগ্রবাদীদের এই নৃশংসতায় প্রাণ দিয়েছেন অনেক কবি, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, ব্লগারসহ মুক্তমনা এবং রুচিশীল ব্যক্তিত্ব। সর্বোপরি, জঙ্গী সংগঠনগুলোর টার্গেট হলো বাঙালি সংস্কৃতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে দেশের মধ্যে একটি অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যা তাদের কার্যক্রমে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়।”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “এদেশে প্রথম জঙ্গী হামলা হয়েছিল ১৯৯৯ সালে, যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, যাত্রা প্যান্ডেলে বোমা হামলা, সিনেমা হলে বোমা হামলা, ১৭ আগস্টের সিরিজ বোমা হামলার পর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা হয় গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয়। এসব হামলায় অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। হামলা প্রতিরোধ করতে ও জনগণের জীবন বাঁচাতে গিয়ে পুলিশের অনেক সদস্য জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন বহুজন।”

ডিএমপি বলেছে, উদীচীর মতো প্রগতিশীল সংগঠনগুলো সারা বছর যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ তথা সরকার নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে সেগুলো বিবেচনা করে থাকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কর্তব্য। পুলিশের এই নিরাপত্তা কার্যক্রমে জনগণের সার্বিক সহযোগিতা কাম্য, যেন আনন্দের এই অনুষ্ঠান বিষাদে পরিণত না হয়ে যায়।

ডিএমপি আরও বলেছে, নিরাপত্তা বিধানে প্রদত্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না মেনে তার বিরোধিতা করে অনুষ্ঠান করা খুবই দুঃখজনক এবং উদীচীর মতো প্রগতিশীল একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের নিকট থেকে যা কখনো কাম্য নয়। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কর্তৃক সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান আয়োজন ও সেখানে প্রদত্ত বক্তব্য খুবই হতাশাজনক। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে তাদের এহেন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

নিজেদের ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে ভবিষ্যতে ডিএমপির বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক নির্দেশনার প্রতি উদীচী শ্রদ্ধাশীল থাকবে বলে প্রত্যাশার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,ডিএমপি,বাংলা নববর্ষ,পহেলা বৈশাখ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close