• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ইউজিসির চিঠির ১০ দিনেও গঠিত হয়নি তদন্ত কমিটি 

প্রকাশ:  ২৮ জুলাই ২০২২, ০১:৫১
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

চলতি মাসের ১৭ জুলাই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ নকিবুল হাসান খানের নিয়োগের তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। চিঠি পাঠানোর ১০ দিনেও তদন্ত কমিটি গঠন করেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। তবে কমিটি গঠনে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর আগে বিভিন্ন মিডিয়ায় নকিবুল হাসান খানের নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি ইউজিসির নজরে আসে। তথ্য গোপন করে ও চাকুরীর বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভেঙ্গে এই শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহিত উল আলম প্রশাসন। নিয়োগে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা এহসান হাবীবের। তবে নিয়োগে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন সেই কর্মকর্তা। অন্যদিকে এই নিয়োগ সম্পর্কে মনে নেই এবং তা বর্তমান প্রশাসন বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছিলেন সাবেক উপাচার্য।

এর আগে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় বিভাগটির প্রধান অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী সিদ্দীকীকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে নিজ কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন নকিবুল হাসান খানের নেতৃত্বে তিন শিক্ষক। যেটি অভিযোগ আকারে উপস্থাপন করেছিলেন বিভাগটির প্রধান। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩০ জুন ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বাকী দুই সদস্য হলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী ও সাবেক কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাহাবুদ্দিন বাদল।

সংশ্লিষ্ট এক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোঃ নজরুল ইসলাম ১৯ জুলাই সভা আহবান করলে সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সভায় যোগ দেননি অন্য দুই সদস্য। অন্যদিকে ২১ জুলাই সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন বাদল তদন্ত কমিটির সভা আহ্বান করে অন্য দুই সদস্যকে আহ্বান জানালে সেখানে উপস্থিত হননি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার বলেন, তালা ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের ঘটনায় করা তদন্ত কমিটি কাজ করছে। দ্রুতই প্রতিবেদন আমরা পাবো। পাশাপাশি দ্রুতই ইউজিসির প্রেরিত চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে জানতে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে মুঠোফোনে কল করেও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে রেজিস্ট্রারের বক্তব্যের ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে তদন্ত কমিটির সদস্য কলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর থেকে। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকার কারনে সভায় আসতে পারিনি। পরবর্তীতে সদস্য সচিব আমার সামনে সভা আহ্বান করে আহ্বায়ক প্রফেসর নজরুল ইসলামকে মুঠোফোনে জানালে তিনি অসম্মত হয়ে জানান যে উনার যা জানানোর তা উপাচার্যকে জানিয়েছেন। আমি আইনের মানুষ। প্রফেসর নজরুল ইসলামের মতো নিয়মের বাইরে কাজ করা মানুষের সঙ্গে আমি তদন্ত কমিটিতে বসতে পারিনা। বৃহস্পতিবার আমি তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করবো। ইউজিসির চিঠির প্রেক্ষিতে উপাচার্য সৌমিত্র শেখর বলেন, আমার প্রশাসন স্পষ্ট এবং পরিষ্কার। আমরা ইউজিসির চিঠি পাবার পর অনেকটা এগিয়েছি। দ্রুতই তদন্ত কমিটি করবো। অন্যায়ে কোন ছাড় হবে না। আর এটাও বুঝতে হবে এই নিয়োগটি আমার সময়ের নয়। সাবেক প্রশাসনের। অনেকেই ভুল বুঝে আমার প্রশাসনের মনে করেছে সেটি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। আমার দায়িত্ব পালনের সময় এমন কোন নিয়োগ হবে না যা আইনসিদ্ধ নয়। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। তবে যদি সংকট থাকে তা সমাধানের ব্যবস্থা করে দ্রুতই সমাধানে যাবো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, এই ঘটনায় ইউজিসি এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারও কঠোর কিন্তু কেনো যে এতো ধীরভাবে আগাচ্ছে তা সামনে আসছে না। তবে নকিবুল হাসান খানকে বাচাতে সক্রিয় রয়েছে অনেকেই। গুন্ডামি আর শিক্ষকতা তো এক সঙ্গে হতে পারে না তাই না। উনি শিক্ষকতাকে গুন্ডামী মনে করে। শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

বিভাগটিতে শিক্ষক দ্বন্দের কারনে আটকে রয়েছে ক্লাস,পরীক্ষা এমনকি প্রকাশিত হচ্ছে না ফলাফল। এই সমাধানে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় সমাধান চেয়ে স্বাক্ষাতও করেছে উপাচার্যের সঙ্গে।

ইউজিসি,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close