• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে শিক্ষকের ‘যৌন হয়রানি’, বিভাগীয় প্রধান অবরুদ্ধ

প্রকাশ:  ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ে ওই বিভাগের প্রধান রেজুয়ান আহমেদকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

বুধবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। দুপুর পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা বিভাগীয় প্রধানকে উদ্ধার করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন ছাত্রী একই বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন।

ওই ছাত্রীর অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষক শুরুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং পরে শ্রেণিকক্ষে এবং পরীক্ষার হলসহ নানা জায়গায় যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিচার ও বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।

মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সঙ্গে দেখা করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ওই ছাত্রী প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের যৌন হয়রানির ঘটনার বর্ণনা করেন।

ওই ছাত্রী জানান, ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ওই শিক্ষক প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি শুরু করেন। এতে সাড়া না দেওয়ায় পরে অভিযুক্ত শিক্ষক যৌন হয়রানির পাশাপাশি একাডেমিক বিষয়েও হয়রানি শুরু করেন। সম্প্রতি অভিযুক্ত শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীর “একাডেমিক রিপোর্ট” আটকে দেন। এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদের কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি ওই শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন এবং বিষয়টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীদের একাধিক সংগঠন মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোট ৩১ জন ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা প্রমাণ হিসেবে মোবাইল ফোনে স্ক্রিনশট দেখান। অভিযোগ করা হলেও বিভাগীয় প্রধান অভিযুক্তের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন।”

এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সামনে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দিতে শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক এবং বিভাগীয় প্রধানের নামফলক ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা রেজুয়ান আহমেদকে অবরুদ্ধ অবস্থান থেকে উদ্ধার করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আবারও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি বলেন, “খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা রেজুয়ান আহমেদের কাছে যাই। বিষয়টি আসলে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো নয়। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। পরে রেজুয়ান আহমেদকে কক্ষ থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। যৌন হয়রানির অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে”

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদের দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি সত্য নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহ,যৌন হয়রানি
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close