• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টুইটারে ফিরিয়ে নিলেন ইলন মাস্ক

প্রকাশ:  ২২ নভেম্বর ২০২২, ০২:৩০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক বলেছেন, টুইটারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট আবার চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, টুইটার ব্যবহারকারীদের ওপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে অল্প ব্যবধানে হলেও তারা এই পদক্ষেপের পক্ষে মত দিয়েছেন। খবর: বিবিসি বাংলা।

“মানুষ তাদের মত দিয়েছেন,” টুইট করে মাস্ক বলেছেন, দেড় কোটির বেশি টুইটার ব্যবহারকারীর ৫১.৮% ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টু্‌ইটার প্ল্যাটফর্মে নাও ফিরতে পারেন, কারণ এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি ফেরার কোনো কারণ দেখি না।”

ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ২০২১ সালে স্থগিত করে দেয়া হয়েছিলো সহিংসতায় তিনি ইন্ধন জোগাতে পারেন এই আশঙ্কা থেকে।

ট্রাম্পের ট্রুথ সোশাল

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা ওই বছর ৬ই জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হিল ভবনে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালানোর কয়েকদিন পর টুইটারের সেসময়কার কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নেন।

প্রেসিডেন্ট পদে জো বাইডেনের বিজয়কে অনুমোদন দেবার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশনে বাধা দিতে শত শত দাঙ্গাকারী ক্যাপিটল ভবনের চত্বরে ঢুকে পড়ে। এর জেরে যে সহিংসতা হয়, তার ফলে প্রাণ হারায় চার জন বেসামরিক মানুষ এবং একজন পুলিশ অফিসার।

এই দাঙ্গার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব অ্যাকাউন্টগুলো দ্রুত স্থগিত করে দেয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমের এই অ্যাকাউন্টগুলোতে তার কয়েক কোটি ফলোয়ার ছিলো। এর কয়েক মাস পর ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশাল’ নাম দিয়ে তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম চালু করেন।

এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে রিপালিকানরা ঘোষণা করেন যে ট্রাম্প ২০২৪এ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার প্রার্থী হিসাবে দাঁড়াবেন।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক চার হাজার ৪০০ কোটি ডলারের এক চুক্তির মাধ্যমে গত মাসে অক্টোবরে টুইটারের কিনে নেন।

টু্‌ইটারের নিয়ন্ত্রণ নেবার সাথে সাথেই তিনি সামজিক মাধ্যমের এই বিশাল প্ল্যাটফর্মে একের পর এক নানা ধরনের আমূল সংস্কারের কাজ শুরু করে দেন। এমনও উদ্বেগ তৈরি হয় যে তিনি ঘৃণা উদ্রেককারী বক্তব্য এবং ভুয়া তথ্য নিয়ন্ত্রণের বিধিনিষেধগুলোও শিথিল করতে যাচ্ছেন।

আমেরিকায় প্রেসিডেন্টের মধ্যমেয়াদী মিডটার্ম নির্বাচন হয় ৮ই নভেম্বর। তার মাত্র সপ্তাহখানেক আগে প্রশ্ন তোলা হয় টুইটারে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টের ওপর থেকে মাস্ক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন কিনা। তিনি এর জবাবে টুইট করেন, “মি. ট্রাম্প এই প্ল্যাটফর্মে আবার ফেরত আসছেন কিনা - এই প্রশ্ন আমাকে যারা করছেন, তাদের সবার কাছ থেকে প্রশ্ন করার জন্য এক ডলার করে যদি নিতাম, তাহলে টু্‌ইটার অর্থের পাহাড় গড়ে তুলতে পারতো!”

ট্রাম্প কি টুইটারে ফিরবেন?

উত্তর আমেরিকায় বিবিসির প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদদাতা জেমস ক্লেটন বলছেন আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্প যদিও বলছেন টু্ইটারে দিনি আর ফিরতে চান না, কিন্তু তিনি জানেন টুইটারের এই জরিপটি ছিলো গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি তার নতুন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে তার অনুসারীদের প্রতি এই জরিপে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন : “ইতিবাচক ভোট দিন। তবে চিন্তা করবেন না। আমরা অন্য কোথাও যাচ্ছি না। ট্রুথ সোশাল আসলে স্পেশাল মাধ্যম।”

ক্লেটন বলছেন তার এই বিবৃতি বিভ্রান্তিকর। তিনি যদি টু্‌ইটারে ফিরতে নাই চাইবেন, তাহলে তার সমর্থকদের সেখানে ভোট দেবার আহ্বান কেন জানাচ্ছেন?

তিনি বলছেন ট্রাম্পের এই দোটানার একটা কারণ হতে পারে যে, ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীর সংখ্যা টুইটারের তুলনায় অনেকটাই কম। অ্যাপ বিশ্লেষক সেন্সর টাওয়ারের সেপ্টেম্বর মাসে দেয়া তথ্যউপাত্ত থেকে জানা যাচ্ছে ৯২ হাজার মানুষ ট্রুথ সোশাল অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন, যেখানে একই সময়ে টুইটার ডাউনলোড করেছেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ।

এছাড়াও টুইটার সবসময়ই ট্রাম্পের প্রিয় সামাজিক মাধ্যম ছিলো। এই মাধ্যম ছিলো তার রাজনৈতিক কণ্ঠ। কিন্তু অন্যদিকে ট্রুথ সোশাল ট্রাম্পের নিজের প্রতিষ্ঠানের তৈরি অ্যাপ। এর পেছনে তিনি অনেক অর্থ ঢেলেছেন। কাজেই, তার নিজের অ্যাপটিকে সফল ও জনপ্রিয় করার একটা তাগিদও তার রয়েছে।

ফলে, জেমস ক্লেটন বলছেন, রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক দুই লক্ষ্যের মধ্যে কোনটা ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত বেছে নেন সেটাই এখন দেখার।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

ইলন মাস্ক,টুইটার,ডোনাল্ড ট্রাম্প
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close