• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পাঁচ বছরেও বিচার হয়নি চার পুলিশ হত্যার

প্রকাশ:  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১০:২৫
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

ঘটনার ৫ বছর হয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি গাইবান্ধার বামনডাঙ্গার চার পুলিশ হত্যা মামলার বিচার কাজ। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামাত শিবির। সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় চার পুলিশ সদস্যকে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় নিহত হয়েছে মোট ১০জন।মামলা হয়েছিল ৩৭টি।পুলিশ হত্যাসহ সবগুলি মামলার চার্জসীট দাখিল করা হয়েছে। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবি বলছেন এ বছরই মামলার বিচারকাজ শেষ হবে বলে তার বিশ্বাস।

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাঈদীর রায়কে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। পিটিয়ে হত্যা করা হয় তদন্ত কেন্দ্রের ৩ পুলিশ সদস্যকে। বামনডাঙ্গা রেল স্টেশনে হামলা করে পিটিয়ে হত্যা করে এক জিআরপি সদস্যকে।বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল হযরত আলী, নাজিম উদ্দিন, তোজাম্মেল হক, বাবলু মিয়া। শুধু এ দুই স্থানেই নয়, তাদের তাণ্ডব চলতে থাকে সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। সহিংসতায় নিহত হয় আ’লীগ সমর্থক শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা এসএম খলিলুর রহমান মামুন, আ’লীগ নেতা আব্দুল হালিম, সত্যেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ, শিবির কর্মী কাজী সোহানুর রহমান সোহাগ, শাহাবুল ইসলাম।

সম্পর্কিত খবর

    মুসলিম দোকান ১৬২টি, হিন্দু দোকান ৬৬টি, মুসলিম বাড়ি ১২টি, হিন্দু বাড়ি ৬টি, মন্দির ৪টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২টি, আ’লীগ অফিস ৪টি, জাতীয় পার্টির অফিস ১টি, জাকের পার্টি অফিস ১টি, মুক্তিযোদ্ধা অফিস ২টি, গণ উন্নয়ন অফিস ১টি, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র ১টি, ক্লাব ২টি, বাস ১টি, রাইচ মিল ১টি, শিক্ষা সমিতি অফিস ১টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭টি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ৬টি, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ৬৭টিসহ প্রকৌশল অফিস, গোডাউন, ইসলামশীপ বিল্ডার্স, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসসহ আশপাশের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৮ ফেব্রুয়ারি হতে ২ মার্চ ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন ও পৌরসভা ওয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি অফিস, বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪কোটি ১৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৯০ টাকা।

    নিহত, আহত ও পরিবারের মাঝে সহায়তা প্রদান- নিহত সত্যেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ ১০ লক্ষ, এসএম খলিলুর রহমান মামুন ১০ লক্ষ, আব্দুল হালিম ১০ লক্ষ, শরিফুল ইসলাম ১০ লক্ষ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা বেগম কাকলি ৫ লক্ষ, আ’লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বাবুল ২ লক্ষ, ছাত্রলীগ নেতা শামিউল ইসলাম ছামু ২ লক্ষ, সন্তোষ কুমার বিকাশ ৭৫ হাজার, গণেশ চন্দ্র ২০ হাজার, ভবদিশ চন্দ্র ২০ হাজার, বিনয় চন্দ্র ২৫ হাজার, দেবেন চন্দ্র ২০ হাজার, নিলুফা ২০ হাজার, মন্দির ২০ মেট্রিক টন চাল, মুক্তিযোদ্ধার অফিস ১০ মেট্রিক টন চাল, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারবর্গের বিপরীতে ২০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লক্ষ টাকা।

    পুলিশ হত্যা মামলায় তৎকালীন সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের জামায়াত দলীয় সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ৮৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২ হাজার ৫০০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে জামায়তের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল আজীজসহ ২৩৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আসামীদের মধ্যে বর্তমানে ২২৭ জন জামিনে ও ২ জন জেল হাজতে আছে। আব্দুল আজীজসহ বাকি ৬ জন বর্তমানে পলাতক আছে তাদের গ্রেফতারে সব ধরণের চেষ্টা চলছে।

    গাইবান্ধা জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যড. শামস-উল আলম হীরু বলেন, মামলার প্রধান আসামী আব্দুল আজীজকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে নিহতের পরিবারগুলো শান্তি পাবে না। আওয়ামীলীগ নেত্রী মোছা: কাকলী বেগম জানান, ওরা মিছিল নিয়ে আমার বাড়িতে সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে হামলা করে। আমরা ভয়ে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাই। ওরা ঘরবাড়িসহ সবকিছু ভাংচুর করে, লুটপাট করে নিয়ে যায় টাকাপয়সা সোনাদানাসহ সবকিছু।

    সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে সর্বদাই সচেষ্ট। অন্যায়কারিকে আমরা কখনও সায় দিব না।

    গাইবান্ধা জজ কোর্টর পিপি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আগামী ৪ মার্চ ২০১৮ইং তারিখে চার্জ শুনানী আছে। চার্জ শুনানী শেষে মামলার স্বাক্ষী শুরু হয়ে যাবে। অতিদ্রুত মামলাটির নিস্পত্তি হবে বলে আশা সরকার পক্ষের এ আইনজীবির।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close