• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বিশেষ মোজাতেই বাজিমাত করছেন র‌্যাকিটিচ

প্রকাশ:  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৪
স্পোর্টস ডেস্ক

সেভিয়ার মধ্যবিত্ত সংসারে তিনি ছিলেন ধ্রুবতারা। বার্সেলোনার মতো বিত্তশালী পরিবারে গিয়েও নিজের স্টেটাস বদলায়নি। সুয়ারেজ, মেসি, ইনিয়েস্তা, পিকেদের মতো মহাতারাদের ভিড়ে হারিয়ে যাননি। বরং আরও ঝকঝকে, ধারালো হয়ে উঠেছেন। শুধু ক্লাব স্তরেই নয়, জাতীয় দলের জার্সিতেও সমান উজ্জ্বল তিনি। মদ্রিচ, পেরিসিচদের দলের নিউক্লিয়াস ইভান র‌্যাকিটিচ।

সম্পর্কিত খবর

    তবে সম্প্রতি পারফরম্যান্স নয়, র‌্যাকিটিচ ইউরোপীয় প্রচারমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছেন অন্য কারণে। মোজার কারণে। শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি। বিশ্বকাপে জাতীয় দলের জার্সিতে বা বার্সার জার্সিতে র‌্যাকিটিচকে দেখা গিয়েছে অদ্ভুত ডিজাইনের মোজা পরতে।

    এমন মোজার রহস্য কী? কিট প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘টেপডিজাইন’-এর কর্ণধার মারিও অফনার জানালেন, মোজার সাফল্যের রহস্য। ‘‘অত্যাধুনিক ডিজাইনের এই মোজার বিশেষত্ব হল, কোনও ভাবেই মোজার স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয় না। মোজার যে প্রান্ত গোড়ালির উপরে থাকে, তা সঠিকভাবে পায়ের সঙ্গে লেগে থাকে। সাধারণত, মোজার ইলাস্টিসিটি নষ্ট হয়ে গেলে খেলার মাঝপথে অস্বস্তিকর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে। এক্ষেত্রে সেরকম হওয়ার সম্ভবনা নেই।’’

    ঘটনা হল, উন্নতমানের মোজার ভিতরের সারফেসে রবার থাকে ইলাস্টিসিটি রক্ষা করার জন্য। তবে টেপডিজাইন-এর বিশেষত্বই আলাদা। এখানে পায়ের পাতায় ছোট ছোট গোলাকৃতি রাবার নব থাকে। যা যথেষ্ট আরামদায়ক। অন্তত সংস্থার কর্ণধারের দাবি এমনই।

    ২০১৫ সালে ব্যবসা শুরু এই কোম্পানির। অস্ট্রিয়া ছোট শহর গ্রাজে। অফনার ব্রাদার্স এবং থমাস ওয়েবার, আলেকজান্দার ক্রোইস ব্যবসা খোলেন। সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের কিট প্রস্তুত করার ভাবনা ছিল তাঁদের কাছে। ব্র্যান্ডের নাম দেওয়া হয় ‘টেপডিজাইন’। মারিও বলছিলেন, ‘‘বর্তমানে আধুনিক যে কোনও মোজায় চামড়া জাতীয় দ্রব্য থাকে না পুরোপুরি। প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়। এখানেই আমাদের ডিজাইনের নতুনত্ব।’’

    ইভান র‌্যাকিটিচ নাকি এতটাই মুগ্ধ এই ধরনের মোজায়, যে বিশেষ আকৃতির এই ডিজাইন ছাড়া মাঠে নামার কথা ভাবেনই না। এমনটাই বলছিলেন অস্ট্রিয়ান মারিও। র‌্যাকিটিচের পা থেকে জনপ্রিয় হওয়া এই ‘গ্রাজ সকস’ বর্তমানে ইউরোপের অধিকাংশ ফুটবলাররা ব্যবহার করেন— ডেলে আলি, কাইল ওয়াকার, পিয়ের অবামেয়াং, থরগান হ্যাজার্ড, ইব্রাহিম ট্রাওরে, আলভারো নেগ্রেদো, ডেভিড আলাবাদের মতো সুপারস্টারদের ভরসা এই মোজা। ইউরোপ সার্কিটে ২ হাজারেরও বেশি ফুটবলার বর্তমানে ব্যবহার করছেন বিশেষ ধরনের এই মোজা। ফুটবলারদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই এই টেপডিজাইনের মোজা।

    কর্ণধারদের দাবি, শুধুমাত্র ফুটবল নয়, টেনিস, অ্যাথলেটিক্স, হ্যান্ডবল, রাগবির মতো খেলাতেও এই বিশেষ ধরনের মোজার ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। অস্ট্রিয়া থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মারিও জানালেন, ‘‘নিঝনি নভগরদ-এ ক্রোয়েশিয়া বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে ইভান আমাদের কোম্পানির দু’জন কর্মীকে ডেকেছিল মোজার বিষয়ে। সেখানে বিশেষ ডিজাইনের অর্ডার করা মোজা পরেই ইভান খেলতে নেমেছিল মেসিদের বিরুদ্ধে। তার পরে তো আপনারাই দেখেছেন কীভাবে পারফর্ম করেছিল ও।’’

    অফনার জানান, ‘‘বার্সেলোনায় ইভানের মোজা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন স্বয়ং মেসি, সুয়ারেজও। মোজার বিষয়ে জানতেও চেয়েছেন। খুব শীঘ্রই মেসি, সুয়ারেজের পায়ে এমন বিশেষ মোজা দেখলে অবাক হবেন না।’’

    বিশ্বকাপে অস্ট্রিয়া যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। তবে সেদেশের মোজাই এবার ফুটবল দুনিয়া কাঁপাচ্ছে। এটাও বা কম কী!

    /এস কে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close