• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

টাকা নিয়ে মাদকের আসামী ছাড়ছে পুলিশ!

প্রকাশ:  ১৩ জুন ২০১৮, ০০:১০
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চললেও টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কোন ধরনের অভিযান দেখা যায়নি। এখন পর্যন্ত পুলিশের তালিকাভুক্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বরং মাদকের আসামীদের ধরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

গত সোমবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন সরকার দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।

সভায় অভিযোগ করা হয়, উপজেলায় অবাধে জুয়া খেলা ও প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। যেখানে সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের সাড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। সেখানে উপজেলার গোবিন্দাসী ও গাবসারা ইউনিয়নের মাঝামাঝি এলাকায় যমুনা নদীর কোল ঘেঁষে প্রতিদিন চলে জুয়া খেলা ও মাদকের হাট। এছাড়া উপজেলায় পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামীদের মাদকসহ গ্রেফতার করলেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলাসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম (এমএ) জানান, সারাদেশে যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সাড়াশি অভিযান করছে সেখানে পুলিশ মাদকের আসামী ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছে। আবার তাদের বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক করলেও নামমাত্র মামলা দিয়ে আদালতে চালান করছে।

একই সভায় অর্জুনা ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব মোল্লা জানান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া উপজেলায় জুয়া মাদকের ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না। গাবসারার এক ইউপি সদস্য আব্দুস সালামকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ আটক করলেও তাকে নামমাত্র মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। ওই মাদক ব্যবসায়ী জামিনে বের হয়ে থানায় এসে পুলিশের সাথে দেন দরবার করে।

ফলদা ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান তালুকদার দুদু জানান, নামমাত্র আসামীদের ধরছে। তারা জামিনে এসে পুরোদমে আবার মাদকের ব্যবসা করছে।

একই সভায় গাবসারা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জানান, থানা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে জুয়া বন্ধের জন্য মৌখিক আবেদন করেছি। অজ্ঞাত কারনে জুয়া খেলা ও মাদক বিক্রি বন্ধ হয়নি। সর্বশেষ টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কাছে বলার পরও বন্ধ করতে পারিনি জুয়া খেলা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক মিয়া জানান, থানা, উপজেলা প্রশাসন ও সরকারী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেও ভূঞাপুরে জুয়া খেলা ও মাদকের হাট বন্ধ করতে পারিনি।

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুছ ছালাম মিয়া বলেন, অপরাধীদের কোন ছাড় নেই। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তাদের স্বার্থ হাসিল না হলে তারা এ ধরনের কথা বলবেই। আমাদের কাজ, যেটা সঠিক সেটা করবো। জুয়া খেলার খবর জানার পরই সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম এডভোকেট জানান, উপজেলায় অবৈধ বালুর ব্যবসার কারনে এলাকায় জুয়া ও মাদকের ছড়াছড়ি হয়েছে। পুলিশ জুয়াড়িদের আটক না করে সাধারন মানুষকে আটক করে হয়রানি করছে।

আইনশৃঙ্খলাসভা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ জানান, পুলিশের মধ্যে ভাল-মন্দ দুটোই রয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েও জুয়া খেলার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তা ছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। -একে

মাদকবিরোধী অভিযান,পুলিশ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close