• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে উপ-উপাচার্য অবরুদ্ধ

প্রকাশ:  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ফটো

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী চিকিৎসকরা।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে এবং দ্রুত নিয়োগের দাবি জানায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মিছিলসহ উপাচার্যের কার্যালয়ে যান এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমানকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তার প্রেক্ষিতে বুধবার বেলা ১২টার দিক থেকে প্রায় চার শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। পরে মিছিলসহকারে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে বিক্ষুব্ধরা।

একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্লকে যায় এবং উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া তার কার্যালয়ে না থাকায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমানের কার্যালয় অবরুদ্ধ করে। সূত্র জানায় দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা।

জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান মন্তব্য প্রকাশে অনীহা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। যা বলার উপাচার্য স্যার বলবেন।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত রাউন্ড শেষ করে বুধবার দুপুরে বিসিপিএস’র উদ্দেশে রওনা করি। গাড়ি মগবাজার ফ্লাইওভারের ওপর ওঠার পর খবর পাই চাকরিপ্রার্থীরা প্রশাসন ভবনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে এবং উপ-উপাচার্য (শিক্ষা)’র কক্ষ অবরুদ্ধ করে রেখেছে।

তিনি বলেন, উপ-উপাচার্যের কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা আছেন। তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ে তারা বেরিয়ে আসবেন।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু নিয়োগ হলেও সেগুলো অনিয়মতান্ত্রিকভাবে তদবিরের মাধ্যমে হয়েছে। তাই ২০১৬ সাল থেকে নতুনদের নিয়োগের জন্য দাবি জানানো হচ্ছে।

এরপর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা ছাত্রলীগের শিক্ষার্থীরা তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসক নিয়োগে অনুরোধ জানায়। এমনকি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাচিপের চাকরিপ্রত্যাশী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে অধ্যাপক কামরুলের আলোচনা হয়। এ সময় তিনি তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০০ চিকিৎসক নিয়োগের পূর্বসিদ্ধান্ত রয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হবে।

এরপর ২০১৭’র অক্টোবর মাসের ১ তারিখে ২০০ জন মেডিকেল অফিসার চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে মেডিকেল অফিসার পদে ১৮০ জন এবং মেডিকেল অফিসার (ডেন্টাল সার্জারি পদে ২০ জনকে নিয়োগের বিষয় উল্লেখ করা হয়।

চলতি মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ২৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। তাই আমরা বিক্ষোভ করছি। এখন উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নিয়োগের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।

পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ম্যাডাম অবরুদ্ধ রয়েছেন। আমরা ম্যাডোমের সঙ্গে আছি। যারা অবরুদ্ধ করেছে তারাও চিকিৎসক, আমাদের ছাত্র। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।

/এসএম

বিএসএমএমইউ,অবরুদ্ধ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close