• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘রাজধানীতে বাসের চেহারা দেখলে মনে হয় আমাদের সব অর্জন ব্যর্থ’

প্রকাশ:  ২১ অক্টোবর ২০১৮, ২১:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কালারফুল বাসের জন্য আমি কত লড়াই করে চলছি। যেখানে আমাদের জিডিপি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মাথাপিছু আয় ১৭৫১ মার্কিন ডলার, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার। আমাদের রপ্তানি ৩৭ বিলিয়ন ডলার। আজকের এই বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের বিস্ময় শেখ হাসিনার আমলে। সেই দেশের রাজধানীতে গাড়ির চেহারা দেখুন? এতো গরিব, গরিব চেহারা, এখানকার বাসগুলো দেখলে মনে হয় আমাদের উন্নয়ন, আমাদের অর্জন সব ব্যর্থ, আমরা লজ্জা পাই।

রোববার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর কলাবাগান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সিটিং সার্ভিস তো সিটিং নেই, এটা হয়ে গেছে চিটিং। এটা চিটিং সার্ভিস। বাস মালিকদের ক্রমাগত ডেকে কথা বলেছি, সতর্ক করেছি। আসলে দরকার মনসিকতার পরিবর্তন। গাড়ির গায়ে লেখা থাকে মা-বাবার দোয়া নিয়ে আল্লাহর নামে চলিলাম। আল্লার নামে চলতে চলতে হয় খাদে নয়তো ডিভাইডারের উপরে। এই হচ্ছে অবস্থা।

তিনি বলেন, বিদেশি যখন ঢাকা শহর দিয়ে চলে এখানে লেটেস্ট মডেলের সব আধুনিক গাড়ি আছে। তার পাশেই ছাল-বাঁকল উঠে গেছে এমন মুড়ির টিনের মতো গাড়ি চলে। যার কোনো ফিটনেস নেই, কিছুই নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যত কাজই করি যদি মানুষের মধ্যে সচেতনতা না বাড়ে, মানসিকতার পরিবর্তন না আসে কোনো কাজে আসবে না। তিনি বলেন, আমাদের অসাধারণ ব্যক্তিরা রাস্তা পার হন উল্টোপথ দিয়ে, আমাদের ভিআইপিরা উল্টো পথে রং সাইডে রাস্তা পার হন। এখন ‘ল’ মেকার যদি ‘ল’ ব্রেকার হন তাহলে কীভাবে রাস্তায় শৃঙ্খলা রাখবো। দেশে যথেষ্ট রাস্তঘাট হয়েছে। মূল সমস্যা ইঞ্জিনিয়ারিং না, মূল সমস্যা সচেতনতার।

তিনি আরও বলেন, সড়কে দুর্ঘটনার জন্য শুধু কি ‘রেকলেস’ বেপরোয়া গাড়ি দায়ী? শুধু কি বেপরোয়া চালক দায়ী? পথচারীও তো মাঝে মাঝে বেপরোয়া। এখানে যানজট, জলজট, জনজট তিনটা একাকার হয়ে যায়। মানুষ ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হয়। তাহলে কীভাবে শৃঙ্খলা আসবে? অনেক বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের চালকদের উল্টাপথে যাওয়ার জন্য বাধ্য করে। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা চালকদের আটকে রাখে। এটা যদি আগামীদিনর নাগরিকরাই তাহলে কীভাবে শৃঙ্খলা আসবে?

সড়ক নিরাপত্তা আইন নিয়ে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের ধর্মঘট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ১৯৮৩ সালের একটা অর্ডিন্যান্স ২০১৮ সালে আইনে পরিণত হল। এই আইন করার আগে ভেটিংয়ের জন্য এক দেড় বছর অপেক্ষমাণ ছিল, ওয়েবসাইটে ছিল। আইন পাস হলো, এখন আন্দোলনের হুমকি। এখনে ধর্মঘট, ওখানে ধর্মঘট আমি কার স্বার্থ দেখবো। এই নির্বাচনের আগে নতুন কিছু করার কোনো সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে যদি কোনো পরিবর্তন সংশোধন প্রয়োজন হয় সেটা ভবিষতে দেখা যাবে। আপতত এই আইনের ব্যাপারে আমি কোনো কম্প্রোমাইজে যেতে পারি না। ভুলভ্রান্তি থাকলে সময় আছে সংশোধন করতে পারবো।

‘কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা: দেশের সার্বিক উন্নয়নের অনুঘটক’ শীর্ষক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব খন্দকার রাকিবুর রহমান, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহাবুব-উল-হক মজুমদার, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক পরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল হক প্রমুখ।

-একে

ওবায়দুল কাদের,বাস
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close