গাজীপুরে বিএনপির প্রতিপক্ষ জামায়াত
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। তবে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দলীয়ভাবে বা দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশ নেওয়া সম্ভব নয় বলে স্বতন্ত্রভাবেই মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ।
জাতীয় পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরেই এক প্লাটফর্মে লড়াই করলেও গাজীপুরে বিএনপির মেয়র প্রার্খী হাসান উদ্দিন সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জামায়াতে নেতা সানাউল্লাহ ভোটের মাঠে নামায় বিষয়টি নিয়ে গাজীপুরে ব্যাপক অালোচনা তৈরি করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা যদিও বলছেন, সমঝোতার মাধ্যমে জামায়াতের প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু বাছাইয়ে টিকে যাওয়ার পর জামায়াতের প্রার্থী এস এম সানাউল্লাহ দলীয় সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্পর্কিত খবর
দলের কেন্দ্রীয় এবং গাজীপুরের নেতারা বলছেন, ২০ দলীয় জোটের সবশেষ বৈঠকে একসঙ্গে নির্বাচন করার বিষয়ে কথা হয়েছিল। তারপরও জামায়াত গাজীপুরে প্রার্থী দিয়ে অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে।
গাজীপুরে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী বলছেন, তাকে ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, এমন কোনো নির্দেশনা কেন্দ্র থেকে আসেনি। বরং তিনি মনে করেন বিএনপিই তাকে সমর্থন দিয়ে তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবে।
আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইয়ের দিকে দৃষ্টি থাকবে সারা দেশের। এর মধ্যে আগামী প্রথম পর্বে গাজীপুর ও খুলনায় ভোট হবে আগামী ১৫ মে। এর মধ্যে গাজীপুরে বিএনপি প্রার্থী করেছে হাসান উদ্দিন সরকারকে। তাকে মোকাবেলা করতে হবে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলমকে।
গাজীপুরে নিজেরা প্রার্থী না দিয়ে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী কিছুটা হলেও বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
নির্বাচনের প্রার্থিতার বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের প্রার্থী এস এম সানাউল্লাহ বলেন, দলের নিবন্ধন না থাকায় দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ২০ দলীয় জোট জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই কেবল জোটগত অংশ নেওয়ার কথা। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেজন্য আমি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি এবং যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি।’ সংগঠনের অনুমোদন ছাড়া জামায়াতের কোনো নেতা কোথাও কখনো নির্বাচনে প্রার্থী হন না।
বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো সমঝোতা প্রস্তাব পেয়েছেন কিনা? এর জবাবে সানাউল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত ওরকম কোনো প্রস্তাব আসেনি। তাই মেয়র পদে ভোট চেয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ২০ দল জোটগতভাবে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। তবে গাজীপুরে জামায়াতের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। সেটি কোনো সমস্যা হবে না। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সেটি সমাধান করা হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে ২০ দলের জোটগত প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে জোটের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারপরেও জামায়াত স্বতন্ত্রভাবে গাজীপুরে প্রার্থী দিয়েছে। সেটি নিয়েও জোটের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে সময় চেয়েছে। এখন প্রয়োজনে আবারও তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হবে। তবে এটি নিয়ে খুব বেশি সমস্যা হবে না।