সবই বলব, শুধু একটু সময় দিন: জিৎ
এবারই প্রথম এক ছবিতে অভিনয় করলেন টালিউডের তিন সুপারস্টার। প্রসেনজিৎ, জিৎ এবং সোহমকে ধরা হলো ‘বাঘ বন্দি খেলা’ ছবির ফ্রেমে। অ্যাকশন আর থ্রিলার ঘরানার এই সিনেমাটির ট্রেলার দেখার পর থেকেই মুখিয়ে ছিল দর্শকরা। ছবিটি মুক্তি পেয়েছে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর)। ছবিতে অভিনয় নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আজকালকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন জিৎ। সাক্ষাতকারটি পূর্বপশ্চিম পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
প্র: ছবিতে আপনার চরিত্রের নাম বারীণ ঘটক বা বাঘ। এই বারীণ ঘটকের পরিচয়টা কী?
সম্পর্কিত খবর
বারীণ ঘটক একজন আন্ডারকভার্ড পুলিশ অফিসার। যে অপরাধীদের বুকে ত্রাস জাগায় আবার বাড়ি ফিরলে একদম সাদামাঠা আম আদমি। সেখানে তার বাঘিনীই তাকে ডমিনেট করে। আসলে কাজের সময় তাকে এতটাই ঝামেলায় থাকতে হয়, যে বাড়িতে নতুন করে সে কোনও ঝামেলা চায় না।
প্র: ছবির ট্রেলারে আমরা দেখলাম কোমরে স্লিং আটকে একটা বহুতল বাড়ি থেকে আপনি দেয়ালের সঙ্গে নব্বই ডিগ্রি অ্যাঙ্গল ধরে তরতর করে নেমে এলেন। এতো অনুশীলন ছাড়া সম্ভব নয়। এর জন্যে কোন ধরনের অনুশীলন করতে হয়েছে আপনাকে?
বিশ্বাস করুন এর আগে এরকম স্টান্টের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না। একদম অনুশীলন ছাড়াই এটা করেছি।
প্র: ভয় করেনি?
এই ছবিতে স্টান্ট ডিরেক্টরের কাজ করেছেন আমাদের দেশের অন্যতম সেরা স্টান্ট ডিরেক্টর অ্যালান আমিন। আর তার সঙ্গে যে টিমটা আছে সেটাও সুপার্ব। অ্যালান সবসময়েই চেষ্টা করে স্টান্টকে কী করে আগের চেয়ে আরও সুপার করে তোলা যায়। সেই ‘বস’ থেকেই ও সেই কাজটা করে আসছে। এই ছবিতেও ও কাজ করতে এসে নতুন নতুন কী করা যায় সেটা চক আউট করে। প্রথমে যে ভয় লাগেনি তা নয়। ভাবছিলাম ঠিকঠাক পারবো তো? পড়ে গেলে কী হবে? ততক্ষণে ও একজন ডামিকে দিয়ে এই স্টান্টটা করিয়ে আমাকে বোঝাচ্ছিল ঠিক কী করতে হবে। আর যতদিন থেকে আমি এই প্রফেশনে এসেছি ততদিন থেকেই একটা কথা আমার মধ্যে প্লে করে, যে এই বিপজ্জনক কাজগুলো করছে সেও একজন মানুষ আমিও একজন মানুষ। কাজেই সে পারলে আমি পারবো না কেন?
প্র: এই ছবিতে আপনি কাজ করেছেন প্রসেনজিতের সঙ্গে। সঙ্গে সোহমও আছেন। এই তিনজন স্টারকে একসঙ্গে আনাটা বাংলা ছবির পক্ষে কতটা লাভজনক হবে?
আসলে প্রায় ১৬-১৭ বছর হয়ে গেল বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। কিন্তু মেইনস্ট্রিম বাংলা ছবিতে এরকম স্টার কাস্ট দেখিনি। হ্যাঁ এর আগে আবিরের সঙ্গে কাজ করেছি, যিশুর সঙ্গে কাজ করেছি, দেবের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ)র সঙ্গে কাজ এই প্রথম। সোহমের সঙ্গেও প্রথম। একমাত্র সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জুলফিকার’ ছাড়া এরকম স্টার কাস্ট এর আগে হয়নি। ফলে ছবি ঘিরে একটা আগ্রহও তৈরি হয়েছে। যদি এই পরিকল্পনাটা কাজ করে, তাহলে অবশ্যই বাংলা ছবি লাভবান হবে।
প্র: ভবিষ্যতে কি এরকম একাধিক নায়কের ছবিতে কাজ করবেন?
অবশ্যই। তবে সবার আগে চরিত্রটা পছন্দ হতে হবে। আমার মনে হয় ইন্ডাস্ট্রিতে যত এরকম ছবি আসবে ততো ইন্ডাস্ট্রি লাভবান হবে।
প্র: এই ছবি তিনটা গল্প নিয়ে। এর মধ্যে ‘বাঘ’ এর দৈর্ঘ্য ৪৫ মিনিট। এত কম সময়ের একটা গল্পে অভিনয় করতে রাজি হলেন কেন?
আমি তো একজন পারফর্মার, একজন আর্টিস্ট। কাজেই এখানে যদি চরিত্রটা ভালো হয় তাহলে সেটা কতখানি বড়, সেই প্রশ্নটা অগ্রাহ্য করা যায়। সেটা যদি তিন মিনিটের একটা চরিত্রও হয়, তাহলেও আমি রাজি। এর আগে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ করেছি আবিরের সঙ্গে। সেখানে আমার স্ক্রিন প্রেজেন্স ছিল মাত্র ৩০ মিনিটের। আর এটা তো ৪৫ মিনিট। অনেকটা সময়।
প্র: এই পূজায় একসঙ্গে ৬টা বাংলা ছবি রিলিজ করল। কিন্তু সেখানে আপনার কোনও ছবি নেই।
সবসময় ইচ্ছা থাকলেও হয়ে ওঠে না। তবে সামনের বছরে আরও ছবি করব। এখন আমার যে ছবির শুটিং চলছে সেটা রিলিজ হবে আগামী বছর পূজার সময়েই। আরও অনেক ছবি আসছে আমার।
প্র: আপনার সব ছবিতেই আপনি ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ চরিত্রে অভিনয় করেন। যেখানে অ্যাকশনটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। বারবার একইরকম ছবিতে কাজ করতে একঘেয়ে লাগে না?
এখনও পর্যন্ত তো লাগেনি। আসলে এরকম ছবিরও তো একটা দর্শক আছেন, যারা আমাকে জিৎ বানিয়েছেন। তাদের কথাটাও তো ভাবতে হবে। বুম্বাদা এখন অন্যরকম ছবি করছেন। কিন্তু দেব অন্যরকম ছবি করলেও অ্যাকশন থেকে কিন্তু সরে আসেনি। আর আমার ছবিতে তো অ্যাকশন নেই, সেই সঙ্গে কমেডি আছে, ড্রামাও আছে। আসলে জিৎ মানেই একটা প্যাকেজ। তবে আগামী বছর আমাকে অন্যভাবেও পর্দায় দেখতে পাবেন।
প্র: সেটা কি পাভেলের ‘অসুর’ ছবিতে? যেখানে আপনি কৌশানির সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন?
এখন এ সম্পর্কে কোনও কথা বলব না। নিষেধ আছে। যা বলার পরিচালকই বলবেন। সময়ে হলে আমিও বলে দেব।
প্র: আর কী কী ছবি আসছে আপনার?
সবই বলব। শুধু একটু সময় দিন। এখনই ঠিক সব কিছু বলে দিতে চাই না। আজ শুধু ‘বাঘ’র কথাতেই আটকে থাকা ভালো।
/অ-ভি