• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বগুড়ায় ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম বেড়ে তিন গুণ

প্রকাশ:  ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:৪৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত বগুড়ার মহাস্থান হাটে ভরা মৌসুমেও সবজির দাম চড়া। গত মৌসুমের তুলনায় শীতকালীন কোনো কোনো সবজির দাম বেড়ে দুই থেকে তিন গুণ হয়েছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মহাস্থান হাটের আড়তদার ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্য বছরের জানুয়ারিতে এ হাটে প্রতিদিন গড়ে ১০০ ট্রাক শীতের সবজি আসত। এবার কৃষকের খেতে সবজির উৎপাদন কম, যার প্রভাব পড়েছে হাটেও। ভরা মৌসুমে সবজির প্রচুর চাহিদা থাকলেও হাটে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাকের বেশি সবজি আসছে না।

চাষিরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় সবজির উৎপাদন খরচ বেড়েছে। অথচ খেতে সবজির ফলন কমেছে। ফলে গত মৌসুমের তুলনায় বেশি দামে সবজি বিক্রি করেও খুব বেশি লাভ হচ্ছে না।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান বলেন, শীতকালীন সবজি চাষের জন্য এবার আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ফলে চাষিরা ভালো ফলনও পেয়েছেন। কৃষকেরা সীমিত লাভে সবজি বিক্রি করছেন। কিন্তু কৃষকের কাছ থেকে কেনা সেই সবজি হাতবদলের পর মধ্যস্বত্বভোগীরা খুচরা পর্যায়ের ভোক্তাদের কাছে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেট এবং দুর্বল বাজার তদারকির কারণেই ভরা মৌসুমে বাজারে সবজির দাম চড়া।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের অন্যতম বৃহৎ সবজির পাইকারি মোকাম মহাস্থান হাট ঘুরে চড়া দামে শীতকালীন সবজি বিক্রির চিত্র দেখা গেছে। হাটে দেখা যায়, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, শসা, গাজর, পেঁপে, পেঁয়াজ, করলা, পালংশাক, লালশাক, পুঁইশাক, টমেটো, কাঁচা মরিচ, আলুসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজির সমারোহ। ক্রেতা-বিক্রেতা, আড়তদার ও পাইকারদের হাঁকডাকে সরগরম হাট। কৃষকের এক হাত ঘুরে কিছু সবজি যাচ্ছে স্থানীয় খুচরা বাজারে। বেশির ভাগ সবজি পাইকারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় মোকামে।

কৃষক ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহাস্থান হাটে গতকাল শীতকালীন শিম প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৫৫, গাজর ২৩, করলা ৬৫, বাঁধাকপি ২২ (প্রতি পিস মাঝারি), ফুলকপি প্রতি কেজি ৩৫, মুলা ২০, নতুন দেশি আলু ৩৮, বিদেশি আলু প্রতিকেজি ৩০, বেগুন ৫৫, টমেটো ৪০, শসা ৩৫, পেঁপে প্রতি কেজি ২২, নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৫, বেগুন প্রতি কেজি ৫৫, ছাঁচি লাউ প্রতিটি ৩৫ ও মিষ্টি লাউ প্রতি কেজি ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অথচ গত বছরের মধ্য জানুয়ারির এ সময় মহাস্থান হাটে শীতকালীন শিম প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৪০, গাজর ১০, করলা ৩০, বাঁধাকপি ৫ (প্রতি পিস মাঝারি), ফুলকপি প্রতি কেজি ১২, মুলা ৫, নতুন দেশি আলু ২০, বিদেশি আলু প্রতি কেজি ১৪, বেগুন ২০, টমেটো ১০, শসা ১৫, পেঁপে প্রতি কেজি ৫, নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২৫, বেগুন প্রতি কেজি ২০, ছাঁচি লাউ প্রতিটি ১৫ টাকা ও মিষ্টি লাউ প্রতি কেজি ১২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৩ হাজার ৮৭ হেক্টর জমিতে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৩৩১ মেট্রিক টন শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়েছে। আর ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন।

সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে মহাস্থান হাটের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কখনো বেশি শীত, আবার কখনো অতি গরমের কারণে এবার সবজি চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। এ ছাড়া কিছু সবজির খেত নষ্ট হওয়ায় ফলন বিপর্যয় হয়েছে। সরবরাহের ঘাটতির কারণে ফুলকপি, টমেটো, মুলাসহ শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজির দাম গত মৌসুমের তুলনায় দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ হয়েছে।

অবশ্য কৃষক ও খুচরা ক্রেতারা বলছেন, পাইকারি এ হাট থেকে সবজি খুচরা পর্যায়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছে মধ্যস্বত্বভোগীদের কয়েক হাত ঘুরে। তাঁদের কারণেই ভরা মৌসুমে সবজির দাম চড়া।

বগুড়া,বগুড়া সদর,রাজশাহী বিভাগ,বাজার দর,দ্রব্যমূল্য

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close