যশোরে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে আগুন, কর্তৃপক্ষের সন্দেহ নাশকতা
যশোরের মুরলী এলাকার দানবীর হাজী মো. মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে আগুনে বেশ কয়েকটি বেঞ্চ পুড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাতে ওই কক্ষে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে সন্দেহ স্কুল কর্তৃপক্ষের।
সম্পর্কিত খবর
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৭ ডিসেম্বর থেকে শ্রেণিকক্ষগুলো তালাবদ্ধ ছিল। এছাড়া নির্বাচনী প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ায় গত দুই দিন ধরে বিদ্যালয়ে আসেননি শিক্ষকরা। বিদ্যালয়টি আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে, এ কারণে বুধবার সকালে কর্মচারীরা কক্ষ পরিষ্কার করতে যান। অষ্টম শ্রেণির কক্ষের তালা খুলে তারা ভেতরে পোড়া গন্ধ ও কিছু বেঞ্চ পোড়া দেখতে পান। সেখানে দুটি বোতলও পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ বিদ্যালয়ে এসে পুলিশকে খবর দেন।
ঘটনাটি নাশকতামূলক কাজ বলে ধারণা করছেন তারা।
সাবেক প্রধান শিক্ষক শাহ আলম বলেন, “সকালে স্কুলে বোমা হামলার খবর শুনেছি। পৌঁছে দেখি অষ্টম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষের বেশ কয়েকটি বেঞ্চ পুড়ে গেছে। ঘরটি ধোঁয়ায় কালো হয়ে ছিল। এমনকি পাখা ও ঘড়িও পুড়ে গেছে। বন্ধ স্কুলে এরকম ঘটনা নাশকতার ইঙ্গিত দেয়। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনে হচ্ছে কেউ ভয় ছড়ানোর জন্য এটা করেছে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন, “আমি কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। বুধবার সকালে পরিষ্কার করার সময় কর্মচারীরা ঘরটি পুড়ে দেখতে পান। খবর পেয়ে আমি শিক্ষকদের নিয়ে সেখানে গিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পুলিশকে খবর দেই।”
“এটি নাশকতার মত মনে হচ্ছে। বিদ্যালয়টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে ও ফেব্রুয়ারিতে আমাদের একটি সুবর্ণ জয়ন্তী রয়েছে। এই দুটি কারণে নাশকতা ঘটতে পারে,” যোগ করেন তিনি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শেখ সালাহউদ্দিন টিপু বলেন, “ঘটনাটি জানার পর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং পুলিশকে অবহিত করেছি। কেরোসিন বা পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। কিন্তু যেহেতু স্কুলটি একটি ভোটকেন্দ্র আর বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, এটা সন্দেহের জন্ম দেয়।”
স্থানীয়রা জানান, স্কুলের আশেপাশে বাইরের কাউকে তারা দেখতে পাননি। গতরাতে তারা কোনো শব্দও শুনতে পাননি। এমনকি আগুনও দেখেননি। বুধবার ঘটনাটি জানতে পারেন তারা।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক শহীদ আলী নাশকতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “সম্ভবত শিশুরা দুষ্টুমি করে এটি করেছে।”
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, “আগুন পুরনো মনে হচ্ছে, পেট্রোলের কোনো গন্ধ আমরা পাইনি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। এটা নির্বাচন-সম্পর্কিত নাশকতা নয়, সম্ভবত অন্য কারণে বলে মনে হচ্ছে। আমরা তদন্ত করছি, এবং আরও তথ্য পরে জানানো হবে।”