• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বাউফলে সুদখোর সুদী কামালের হাত থেকে বাঁচার আকুতি

প্রকাশ:  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৪৯
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর বাউফলে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সুদখোরের নির্যাতনের শিকার হয়ে ভিটামাটি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক পরিবার। সুদখোর সুদী কামালের হাত থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়ে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বাউফল পৌর শহরের সরকারি কবরস্থানের পাশে একটি ভবনে জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

নয় বছর পূর্বে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের মানখাম গ্রামের বাসিন্দা জয়ন্ত বিশ্বাস নামে এক কৃষক একই গ্রামের কামাল নামে এক সুদী কারবারির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার করেন। ধারের শর্ত এবং প্রমাণ স্বরুপ জয়ন্ত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ব্লাংক চেক এবং সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেন ওই সুদের কারবারি কালাম। এরপর থেকেই সুদের টাকা আদায়ের জন্য জয়ন্ত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর শুরু হয় নিপিড়ন। সুদের টাকা দিতে দেরি হলেই নানাভাবে নিপীড়ন চালাতো কামাল। এই নিপিড়নের হাত থেকে বাঁচতে গত নয় বছরে ৫০ হাজার টাকার বিপরীতে সুদ-আসলে প্রায় ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরেও আরো ৩ লক্ষ টাকা দাবি করছেন ওই সুদের কারবারী কামাল।

কিন্তু এই টাকা দিতে হলে নিজের পৈত্রিক ভিটে বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো পথ না থাকায় এই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন জয়ন্ত বিশ্বাস। আর এতে আরো ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন কামাল। বর্গা চাষী জয়ন্ত বিশ্বাসের জমির সকল ধান কেটে নিয়ে যায় কামাল। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি সে, রাতের আঁধারে গিয়ে চড়াও হয়েছেন জয়ন্তর পরিবারের সদস্যদের উপরে। হামলা চালিয়েছেন জয়ন্ত বিশ্বাসের বসতঘরে। পরিস্থিতি এমন পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছে, জীবন বাঁচাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজের পৈত্রিক বাড়ি ছাড়তে হয়েছে তাকে। বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।

এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে নিজের জীবনের করুণ অবস্থা তুলে ধরে বাঁচার আকুতি জানায় জয়ন্ত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে সাংবাদিকদের শরনাপন্ন হওয়ায় আরো রুদ্র মূর্তি ধারণ করেছেন সুদী কারবারি কামাল। মুঠো ফোনে কল করে জয়ন্ত বিশ্বাসকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার পাশাপাশি সাংবাদিকদেরকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন তিনি।

রেকর্ডটিতে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে কামাল বলেন, সাংবাদিক লাগে কোন কামে, কোর্ট কাচারিতে ওই পেপার কাটিং কোনো কামে লাগে, সাংবাদিক কেউ জিগায়, গেলোবার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আইছিলো, মাইর খাইয়া যাওয়া লাগছে। আমি সাংবাদিক......., সাংবাদিকগো মায়গো........, আমার ধারে সাংবাদিকগো পাঠা, যা করার আমি কইরা দিমু হানে, জান ভিক্ষা চাইলেও বাঁচতে পারবি না, যে প্রান্তে যাইয়া পলাছ, হেই জায়গা দিয়া বাইর করমু, তোর মায়রে..........।

জয়ন্ত বিশ্বাসের মা কানন বিশ্বাস বলেন, যেটুকু জমি ছিলো তা বিক্রি করে সুদের টাকা দিয়েছি। এখন স্বামীর ভিটে ছাড়া আর কিছু নেই। সেই ভিটায় থাকতে পারছি না। আরো টাকা চায়। দিতে না পারায় আমাদের ঘর-দুয়ার ভাঙে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার ছেলেকে মারার হুমিক দেয়। তাই ঘর-বাড়ি ছেড়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিছি, আমাদেরকে একটু বাঁচান বাবা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. কামাল হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, আমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে জমি দেওয়ার কথা বলে। যার স্বাক্ষী আছে। এহন আমারে জমির দলিল দিতে হবে।

এ ঘটনায় বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএম

পটুয়াখালী,আকুতি,সুদী কামাল,বাউফল,পরিবার

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close