• সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মামলায় সাক্ষ্য না দেওয়ায় কুড়িগ্রামে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বেতন বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশ:  ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:৪৬
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

বারবার তলব করার পরও সাক্ষ্য দিতে না আসায় পুলিশের দুই উপপরিদর্শকের (এসআই) বেতন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ওই দুই কর্মকর্তাকে ‘কেন সাজা দেওয়া হবে না’, তা সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই দুই কর্মকর্তার মধ্যে এসআই মো. আশেদুজ্জামানকে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং এসআই মো. তসির উদ্দিনকে ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (তৃতীয় আদালত) বিচারক মো. মজনু মিয়া এ আদেশ দেন। আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদেশে বলা হয়েছে, রাজারহাট থানায় ২০১৯ সালের একটি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আশেদুজ্জামানকে তার অভিযোগপত্রের স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তলব করেন আদালত। ১৮টি ধার্য দিবস অতিবাহিত হলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। এরপর ‘এর জন্য কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে না’ মর্মে ব্যাখ্যা দিতে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও তিনি আদালতে হাজির হননি বা সাক্ষ্যও দেননি। আদালত থেকে পর্যায়ক্রমে ১৯টি ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দেওয়ার যাবতীয় প্রক্রিয়াসহ আদেশের কপি ইস্যু করা হলেও ওই সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেননি। এটি আদালত অবমাননার শামিল।

এ কারণে আদালত কর্তৃক ইস্যুকৃত কোর্ট সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা না দেওয়া পর্যন্ত অথবা আদালত পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তাঁর বেতন আটকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে একই থানায় ২০২১ সালের একটি মামলার এজাহারকারী এসআই মো. তসির উদ্দিনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার তলব করেছিলেন আদালত। বারবার প্রসেস দেওয়া সত্ত্বেও এজাহারকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য না দেওয়ায় ‘কেন শাস্তি দেওয়া হবে না’ মর্মে ব্যাখ্যা দাখিলের দিন ধার্য ছিল বৃহস্পতিবার। এই মামলার দুই আসামির মধ্যে একজনের হাজিরা এবং অপরজনের সময়ের আবেদন করা হয়েছিল। এদিন তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষী হাজির হলেও অপর সাক্ষী এজাহারকারী এসআই মো. তসির উদ্দিনের হাজিরা এবং ব্যাখ্যা আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।

২০২১ সালের ওই মামলায় এজাহারের স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য এসআই তসির উদ্দিনকে প্রথমে আদালতে হাজির হতে বলা হয়। ১১টি ধার্য কার্যদিবস অতিবাহিত হলেও তিনি আদেশ তামিল করেননি। সর্বশেষ ধার্য তারিখে ‘এর জন্য তাকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না’ মর্মে ব্যাখ্যা তলব করা হয়। কিন্তু তিনি এ আদেশও তামিল করেননি। আদালত থেকে পর্যায়ক্রমে ১১টি ধার্য তারিখে সাক্ষ্য দেওয়ার যাবতীয় প্রসেসসহ আদেশের কপি ইস্যু করার হলেও এসআই তসির উদ্দিন আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেননি।

এটি আদালত অবমাননার শামিল বলে উল্লেখ করেছেন বিচারক। এ কারণে তার বেতন বন্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

উভয় আদেশের কপি রাজারহাট থানাসহ পুলিশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের ২০১৯ সালের একটি আদেশের বরাত দিয়ে আদালত তার আদেশে বলেন, ‘যেসব সরকারি কর্মচারী মামলায় সাক্ষী রয়েছেন, তাঁরা যদি সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির না হন, তাহলে অন্যান্য নির্দেশনার পাশাপাশি তাঁদের বেতন আটকে দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।’

আদালত

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close