• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

যশোরে প্রাথমিকের ১৬ শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত

প্রকাশ:  ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:২৭ | আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৪৭
যশোর প্রতিনিধি

যশোরে এক স্কুলের ছয় জনসহ ১৬ শিক্ষকের শরীরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সব শিক্ষক বর্তমানে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। আক্রান্ত শিক্ষকরা সবাই দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এদিকে শিক্ষকদের করোনায় আক্রান্তের খবরে আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করায় উপস্থিতির হার অর্ধেকে নেমেছে। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, করোনাকালে কোনো শিক্ষার্থীকেই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে চাপ দেওয়া হচ্ছে না। আর করোনায় আক্রান্ত বিদ্যালয়গুলোর অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। সীমিত পরিসরে ক্লাস নিচ্ছেন সুস্থ শিক্ষকরা।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সংক্রমিত ১৬ শিক্ষকের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১৪ জন আর অপর দুজনের মধ্যে একজন শার্শার ও একজন অভয়নগরের। তাদের যশোর শহরতলি সদরের বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই ছয়জন সহকারী শিক্ষক আক্রান্ত হয়েছেন।

করোনায় আক্রান্ত শিক্ষকরা সবাই বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রতিদিনই জেলার কোনো না কোনো বিদ্যালয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা।

সদরের বালিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, তার বিদ্যালয়ের ১৭ শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন করোনায় আক্রান্ত। তাদের মধ্যে তিন শিক্ষকের অবস্থা কিছুটা খারাপ। বাকিরা সুস্থ আছেন। শিক্ষকরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে ভীতির সঞ্চার সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমি উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারা কেউ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেননি। শিক্ষকদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে ক্লাসে উপস্থিতির হার কমে নেমে এসেছে ১৫-২০ শতাংশে। আমরা অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। যেসব শিক্ষার্থী স্কুলে ক্লাস করতে আসছে, তাদের সুস্থ শিক্ষকদের দিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে।

করোনায় আক্রান্ত শার্শার যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, আমি কিছুটা সুস্থ আছি। আমার স্কুলে ৪ জন সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আর একজন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। বাকি দুজন শিক্ষক প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন। আমি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে ক্লাসে কিছুটা উপস্থিতির হার কমেছে বলে জানান এই প্রধান শিক্ষক।

মোশারফ্ফ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, তিনি তার সন্তানদের আপাতত বিদ্যালয়ে পাঠানো থেকে বিরত রেখেছেন। শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা না দিয়ে বিদ্যালয় খোলা বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে ১৬ জন শিক্ষকের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যেসব শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, সবারই করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা গ্রহণ সম্পন্ন করেছিলেন। শিক্ষকরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিললেও কোনো শিক্ষার্থীর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হলে কী করতে হবে, সে ব্যাপারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হতে বা কোনো গুজবে কান না দিতে অভিভাবকদের অনুরোধ জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, জেলায় ৮টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৮৯। এসব বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত ৪ হাজার ৪০০ শিক্ষকের করোনা টিকা গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

পূর্বপশ্চিমবিডি/জিএস

যশোর,শিক্ষক,করোনায় আক্রান্ত

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close