• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের চার দশক: অর্জন-রেকর্ড

প্রকাশ:  ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৩:৫৬
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ইতোমধ্যেই পর্দা উঠেছে বিশ্ব ক্রিকেটের একমাত্র মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা এশিয়া কাপের। হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত এবারের আসরটি এই প্রতিযোগিতার ষোড়শ আসর। এশিয়া কাপের ষোড়শ আসর শুরু হয়ে গেলেও টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মাঠে নামছে আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট), টুর্নামেন্টের অন্যতম আয়োজক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

বাংলাদেশ এশিয়া কাপ প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রবীণ দল। এশিয়ার ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতায় টাইগারদের পদচারণা প্রায় চার দশক ধরে। লাল-সবুজদের আরেকটি এশিয়া কাপ অভিযানের আগে চলুন দেখে আসি টুর্নামেন্টটিতে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান-

প্রথম অংশগ্রহণ

১৯৮৬ সালে শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসর প্রথমবারের মতো অংশ নেয় বাংলাদেশ। লঙ্কান বোর্ডের সঙ্গে তিক্ততার জেরে সেবার অংশ নেয়নি আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। মূলত ভারত অংশ না নেওয়ায় এশিয়া কাপ খেলার সুযোগ পায় তৎকালীন সহযোগী সদস্য বাংলাদেশ।

সর্বমোট অংশগ্রহণ

এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসরে প্রথমবার অংশ নেওয়ার পর থেকে প্রতিযোগিতাটির সবগুলো আসরেই বাংলাদেশকে দেখা গেছে। ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে টাইগাররা যৌথভাবে এশিয়া কাপের ১৪টি আসরে অংশ নিয়েছে, যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অংশগ্রহণের নজির।

এশিয়া কাপ আয়োজন

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাটিতে পাঁচবার এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯৮৮, ২০০০, ২০১২, ২০১৪২০১৬ সালে এশিয়া কাপের স্বাগতিক ছিল বাংলাদেশ। আর কেউ এতবার এশিয়া কাপের স্বাগতিক না হওয়ায় সবচেয়ে বেশিবার এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের রেকর্ডটাও তাই বাংলাদেশের দখলে।

সেরা সাফল্য

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হাতে এশিয়া কাপের শিরোপা ওঠেনি। তবে এশিয়ান ক্রিকেটের এই প্রতিযোগিতায় তিনবার ফাইনালে খেলেছে টাইগাররা। ২০১২ আর ২০১৮ সালে ওয়ানডে সংস্করণে এবং ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠেয় আসরে ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। তবে প্রতিবারই বাংলাদেশকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রানার্সআপ হিসেবে।

ম্যাচ-জয়-হার

ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজিত এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ৪৩ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সাতটি জয়ের বিপরীতে বাকি ৩৬টি ম্যাচেই হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি এবং ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হংকংয়ের বিপক্ষে একটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে বাংলাদেশ।

সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ

ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহটি এসেছিল ২০১৪ সালে। দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। পাশাপাশি আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস, উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম ও মমিনুল হক ফিফটি করেন। সেই সঙ্গে সাকিব আল হাসান খেলেন ১৬ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ক্যামিও ইনিংস।

সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ

এশিয়া কাপের ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহটি এসেছিল ২০০০ সালে, সেখানেও প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল পাকিস্তান। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠেয় সেই আসরে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮৭ রানেই অলআউট হয় টাইগাররা। এশিয়া কাপের আসরে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডও এটিই।

সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক

এশিয়া কাপের ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক মুশফিকুর রহিম। এই প্রতিযোগিতায় ২১ ম্যাচে ৩৬.৭৮ গড় ও ৮৪.৫২ স্ট্রাইক রেটে ৬৯৯ রান করেছেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি

৫০ ওভারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডটি রয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের দখলে। এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে ১৮টি ম্যাচে এই সাবেক বাহাঁতি স্পিনারের উইকেটসংখ্যা ২২টি।

সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি

ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিকুর রহিম। এই টুর্নামেন্টে তার ব্যাট থেকে এসেছে দুটি শতক। একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, অলক কাপালি, এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস।

ফাইফার

বাংলাদেশের কোনো বোলারই এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপের কোনো ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করতে পারেননি। এক ইনিংসে চার উইকেট পাওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে সাইফুল ইসলাম, সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানের।

ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ

এশিয়া কাপের মঞ্চে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি মুশফিকুর রহিমের। ২০১৮ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজিত সর্বশেষ এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৫০ বলে ১৪৪ রান করেছিলেন তিনি। লঙ্কানদের বিপক্ষে মুশফিকের ইনিংসটি ১১টি বাউন্ডারি ও চারটি ছক্কায় সাজানো ছিল।

সেরা বোলিং ফিগার

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগারটি সাইফুল ইসলামে। ১৯৯৫ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপের গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ১০ ওভার বল করে দুই মেডেনের বিনিময়ে ৩৬ রানের খরচায় চার উইকেট নিয়েছিলেন এই সাবেক ডানহাতি পেসার।

এক আসরে সর্বোচ্চ রান

ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পক্ষে এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি মুশফিকুর রহিমের। ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় আসরে ৫ ম্যাচে একটি করে সেঞ্চুরি আর অর্ধশতকের সুবাদে ৬০.৪০ গড় ও ৮১.১৮ স্ট্রাইক রেটে ৩০২ রান করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।

এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট

বাংলাদেশের পক্ষে এশিয়া কাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির রেকর্ডের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান। ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত ওয়ানডে ফরম্যাটে আয়োজিত সর্বশেষ এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচে বল হাতে নিয়ে ৪.৪ ইকোনমি রেটে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন এই বাহাঁতি পেসার।

সর্বোচ্চ ডিসমিসাল

এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের উইকেটরক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের মালিক মুশফিকুর রহিম। ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় তার ডিসমিসাল সংখ্যা ১৭টি। এর মধ্যে ১৪টি ক্যাচ লুফে নেওয়ার পাশাপাশি এই বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক করেছেন ৩টি স্টাম্পিং।

সর্বোচ্চ জুটি

ওয়ানডে সংস্করণে এশিয়া কাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটিটি গড়েছেন জুনায়েদ সিদ্দিকী ও ইমরুল কায়েস। ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কায় আয়েজিত সেই আসরে গ্রুপপর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে দ্বিতীয় উইকেটে ১৬০ রান যোগ করেন দুই বাংলাদেশি ব্যাটার।

এশিয়া কাপ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close