আফগানিস্তানে সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করল তালেবান
আফগানিস্তানে সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তালেবান সরকার। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তারা। এরপর কট্টর ইসলামি আইন বাস্তবায়নে একের পর এক বিতর্কিত ও মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ নিতে শুরু করে তারা। এবার শারিয়াহ আইনের দোহাই দিয়ে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করল।
বুধবার (১৬ আগস্ট) তালেবান সরকারের আইনমন্ত্রী আব্দুল হাকিম কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।
সম্পর্কিত খবর
বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে দেশটির আইনমন্ত্রী বলেন, “আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার পেছনে শারিয়াহ আইনের কোনো ভিত্তি নেই। তারা জাতীয় স্বার্থের (শরিয়াহ আইন বাস্তবায়ন) পক্ষেও কাজ করে না; ফলে দেশও তাদের ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করে না।”
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এ ঘোষণা এটাই প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানে বহুপক্ষীয় রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করতে চায় তালেবান। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেদের একচেটিয়া অধিকার ধরে রাখার পক্ষে তারা।
২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর কোনো দেশই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তালেবানরা ব্যাপকভাবে নারী ও মেয়েদের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করেছে তারা। নারীদের চলাফেরা, উপার্জন, বিউটিপার্লার প্রভৃতি কার্যকলাপের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কট্টরপন্থি তালেবানরা।
গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান রোজা ওতুনবায়েভা এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানে নারীদের পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, ব্যায়ামাগার, সরকারি গোসলখানায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি নারীদের প্রকাশ্যে আসতে হলে বোরকা পরে আসা বাধ্যতামূলক করা হয়। কিশোরী ও নারীদের জন্য স্কুল ও উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করে তাদের ওপর সবচেয়ে বড় দমন-পীড়ন চালায়।
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের বিশ্ব শিক্ষা দূত ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন মুসলিম দেশগুলোকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে ধর্মীয় নেতাদের প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে তালেবান সরকারকে বোঝানো উচিত। ইসলাম ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করে নারীদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা যে ভুল, সেটা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে।”