বড় দলগুলো নিজেদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করে: ড. কামাল

বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘দেশের রাজনীতিতে বড় দলগুলো নিজেদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করে। তারা জনগণের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখছে না। তবে মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় সবচেয়ে বড় শক্তি ‘সচেতন নাগরিক’। কেউ যাতে সংবিধান লঙ্ঘন না করতে পারে- এ ব্যাপারে দেশের জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের ১৩১ নম্বর গ্যালারিতে ‘আমরা, বাংলাদেশের জনগণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের ৫০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধান সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়নি। সংবিধানে ‘সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ লেখার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে মানুষ যে চেতনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সংবিধানের চার মূলনীতিতে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এখানে আমাদের অতীত লড়াইও ভবিষ্যৎ অভিযাত্রাও ছিল। সংবিধান রক্ষায় ও গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে সবাইকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক দল বদলের এমন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে যে, কেউ একটি দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হওয়ার পরে শুধু মন্ত্রী হওয়ার লোভে বা ব্যক্তিগত স্বার্থে খেয়ালখুশিমত দল পরিবর্তন করেন। তাদের এই দল পরিবর্তন বিবেকের তাড়নায় নয় বা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্যও সহায়ক নয়।’

অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ’ বর্তমানে একটি আপ্তবাক্যে পরিণত হয়েছে। এটি এখন শুধু বলার জন্য বলা হয়ে থাকে। সংবিধানের বেশিরভাগ সংশোধনী শাসকগোষ্ঠীর ইচ্ছায় হয়েছে, জনগণের ইচ্ছায় নয়।’

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাকিল আহমেদের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকবর হোসেন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নাসিম আখতার হোসাইন ও সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের সভাপতি অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।