• শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

একালের হীরক রাজা

প্রকাশ:  ২১ জুন ২০২৪, ২৩:০৭
সৈয়দ বোরহান কবীর

কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি ‘হীরক রাজার দেশে’। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্রটি একটি কালজয়ী সৃষ্টি। রূপকের মাধ্যমে, প্রতীকী চরিত্রে সত্যজিৎ রায় উদ্ভট শাসনের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। ‘হীরক রাজা’ স্বৈরশাসন, অপশাসনের প্রতীক। এই রাজার স্বেচ্ছাচারিতায় বিপর্যস্ত হয়েছিল একটি দেশ। ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্রটি যুগে যুগে সব অযোগ্য, স্বৈরাচারী, লোভী শাসকদের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। হাস্যরসের মাধ্যমে অপশাসনের স্বরূপ উন্মোচন করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তবে, উদ্ভট এবং অপরিণামদর্শী নেতৃত্ব শুধু একটি দেশ বা রাষ্ট্রের জন্যই ক্ষতিকর নয়। স্বেচ্ছাচারী, একনায়ক একটি দল এবং একটি পরিবারের জন্যও বিপদজ্জনক। ‘হীরক রাজা’ কেবল দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়, পরিবার এবং দলের জন্যও প্রযোজ্য। একজন অযোগ্য নেতা তার ‘তুঘলকী নেতৃত্বে’ তার নিজের দলেরই বারোটা বাজিয়ে দিতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে যা ঘটছে তাতে হীরক রাজার কথা নতুন করে মনে পড়লো।

গত কয়দিনে বিএনপিতে যা চলছে তা কেবল হীরক রাজার অবাস্তব, একগুয়ে সিদ্ধান্তের সাথেই তুলনীয়। ঈদের ছুটি শুরু হবার আগেই বিএনপিতে ঘটে গেল ভূমিকম্প। এই ভূমিকম্পে তছনছ, লন্ডভন্ড দলটি। একটি দলে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসতেই পারে। অযোগ্যতা এবং ব্যর্থতার কারণে কমিটি বাতিল হতেই পারে। দলের ভেতরে কেউ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তার শাস্তি হওয়াই উচিত। কিন্তু এসব প্রতিটি কাজই হওয়া দরকার নিয়ম নীতি মেনে। আইন সিদ্ধ পথে, গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে, একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু বিএনপিতে এখন যা হচ্ছে তা অগণতান্ত্রিক এবং স্বেচ্ছাচারিতার চূড়ান্ত রূপ। বিএনপিতে ভূমিকম্প শুরু হয় ১৩ জুন মধ্যরাতে। গভীর রাতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালের মহানগর আহ্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। বিলুপ্ত করা হয় যুবদলের কমিটি, ছাত্রদলের মহানগর কমিটি। এসব কমিটি বাতিল এতোটাই আকস্মিক যে দলের শীর্ষ নেতারাও এ সম্পর্কে অন্ধকারে ছিলেন। অনেক নেতাই টিভি স্ক্রলে বিএনপির বিভিন্ন কমিটি বিলোপের সংবাদ দেখেন।

সম্পর্কিত খবর

    বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার কারণেই কমিটি বিলোপ করা হয়েছে। হতেই পারে। কিন্তু তাহলে তো দলটির কোন কমিটিই এখন থাকার কথা নয়। নয় বছর ধরে বিএনপিতে কোন কাউন্সিল হয় না। যিনি কমিটি বিলোপ করলেন তিনিই তো মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব কমিটি বিলোপ করেই ক্ষান্ত হননি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কেন্দ্রীয় কমিটিতেও আনা হয়েছে বড় রদবদল। গত ১৫ জুন মধ্যরাতে এই রদবদল করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে ৩৯ টি পদে নেতাদের অনেককে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। অনেকের পদ পরিবর্তন করা হয়েছে।’ বিএনপিতে মধ্যরাতে কেন এই ‘ক্যু’ হলো এনিয়ে নানাজনের নানা মত। অনেকে বলছেন, আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য এই অ্যাকশন। আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য কি এসব পুঁচকে নেতারা দায়ী? শীর্ষ নেতারা কি এই ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারে? ব্যর্থতার প্রধান দায়তো ভারপ্রাপ্ত প্রধান নেতার।

    কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে বিএনপির তৃণমূলের আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্যই এই পরিবর্তন। এতে তৃণমূল খুশী এমন কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তৃণমূল কি চেয়েছিল? তাদের মতামত কে নিয়েছে? সংস্কারপন্থীদের পদোন্নতি দেয়া হলো তৃণমূলের ইচ্ছায়? এটা কেউ বিশ্বাস করবে? কিন্তু আমি এ বিতর্কে যেতে চাইনা। বিএনপির এই পরিবর্তন কতটা জরুরি ছিলো, কেন এই পরিবর্তন, এই একতরফা সিদ্ধান্ত গুলো কতটা সঠিক হয়েছে, আমি সেই প্রসঙ্গে যেতে চাই না। আমার খুব সহজ এবং সাধারণ একটি প্রশ্ন। এই সিদ্ধান্ত গুলো কীভাবে নেয়া হলো! এধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে, নাকি এক ব্যক্তির খেয়াল খুশীতেই সব কিছু ওলট পালট করা হলো?

    বিএনপির নেতারাই স্বীকার করেছেন, তারা এধরনের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অন্ধকারে ছিলেন। কেউ কিছুই জানতেন না। প্রশ্ন হলো, একটি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল অগণতান্ত্রিক কায়দায় এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এই ঘটনার পর একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে, বিএনপি যে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছে তা কোন গণতন্ত্র? তারেক জিয়ার গণতন্ত্র? মধ্যরাতে ‘ক্যু’ এর গণতন্ত্র? বর্তমান গণতন্ত্র বিদায় করে বিএনপি এই গণতন্ত্র আনতে চায়?

    বিএনপি দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে। এই ১৭ বছরের মধ্যে ১৩ বছর ধরে তারা তাদের ভাষায় ‘গণতন্ত্রের জন্য লড়াই’ করছে। গণতন্ত্রের সংগ্রামের অংশ হিসেবে দলটি ২০১৪ সালে এবং ২০২৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে। নানা রকম আন্দোলন সংগ্রাম করেও তারা একটি সত্যিকারের আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। বার বার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি নিজেই এখন সংকটে। বিএনপির প্রধান নেতা বেগম খালেদা জিয়া এখন রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। শেখ হাসিনার কৃপায় তিনি জেল থেকে ফিরোজায় থাকছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেলে যাবার আগে বেগম জিয়া সর্বময় ক্ষমতা তুলে দেন তার পুত্রের হাতে। পুত্র তারেক জিয়াকে রাজনীতিতে টিকিয়ে রাখার জন্য সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল দলের শেষ কাউন্সিলে। চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে বা অক্ষমতায় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের হাতেই চেয়ারম্যানের সব ক্ষমতা অর্পিত হবে। জেলে যাবার আগে বেগম জিয়া তেমনটিই করে গেছেন। সেই ব্যবস্থা এখনও বহাল রয়েছে। কেউ যদি বিএনপির গঠনতন্ত্র গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে দেখবেন, এই দলে চেয়ারপার্সনের হাতে নিরঙ্কুশ এবং সর্বময় ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। চেয়ারপার্সন পারেন না, এমন কোন কাজ নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধানের হাতে যেভাবে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা গঠনতন্ত্রে দেয়া হয়েছে, সেই ক্ষমতা জার্মানিতে নাৎসী পার্টির হিটলারের হাতেও ছিলো না। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সম্পর্কে বলা হয় যে, ‘একজন নারীকে পুরুষ এবং একজন পুরুষকে নারী করা ছাড়া ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সব কিছু করতে পারে।’ বিএনপি চেয়ারপার্সনের ক্ষমতা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চেয়েও বেশী। তিনি চাইলে রুমিন ফারহানাকে ‘রুমী ফারহান’ বানাতে পারেন আবার রিজভী আহমেদকে রিজভী বেগম বানিয়ে দিতে পারেন। চেয়ারম্যান যা বলবে সেটিই সত্য, সেটিই শিরোধার্য। বেগম জিয়া এই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা উত্তরাধিকার সূত্রে তারেক জিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছেন।

    নিরঙ্কুশ ক্ষমতা থাকলেও বেগম জিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতাদের মতামত নিতেন। কমিটি বাতিল কিংবা দল থেকে কাউকে বাদ দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত গুলো স্থায়ী কমিটিতে নেয়া হতো। তার তবু চক্ষু লজ্জা ছিলো। অন্তত যৌথ সিদ্ধান্তের একটি আবরণ তিনি দিতেন। বিএনপি মহাসচিব কে.এম ওবায়দুর রহমান এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন। এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দলের ভেতর আলোচনা হয়েছিল। তিনদিন লাগাতার বৈঠকের পর ঐ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৯১ সালে দলের হেভিওয়েট নেতা ব্যরিস্টার নাজমুল হুদাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল দলগত ভাবে। স্থায়ী কমিটিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে। অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে ২০০১ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল বিএনপি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হয়েই তিনি স্বাধীন সত্ত্বায় নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। জিয়ার মাজারে না যাবার কারণে তাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অভিসংশন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঐ সিদ্ধান্ত বেগম জিয়া একা নেন নি। সংসদীয় দলের বৈঠকে এ ব্যাপারে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। অবশ্য সংসদে রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপনের আগেই অধ্যাপক চৌধুরী পদত্যাগ করেন।

    ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্তও বিএনপির স্থায়ী কমিটি সক্রিয় ছিলো। সিদ্ধান্ত যেই নিক, বিষয়টি স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হিসেবে ঘোষিত হতো। কিন্তু এখন বিএনপিতে এসব সৌজন্যতার বালাই নেই। বিএনপিতে এখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় লন্ডন থেকে। এক ব্যক্তির খেয়াল খুশীমতো। তারেক জিয়া দলের অন্য নেতাদের চাকর-বাকর মনে করেন। তাদের মতামত নিয়ে তিনি নিজেকে খাটো করতে চান না। অন্যের মতামত নিলে যদি দুষ্ট লোকেরা তাকে মুর্খ বলে-এজন্য তারেক হীরক রাজার স্টাইলে সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৮ সালে বিএনপির সামনে নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া কোন বিকল্প ছিলো না। নির্বাচনে না গেলে দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেত। এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি জোটগতভাবে নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে একটি বৃহত্তর জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্ণেল (অবঃ) অলি আহামেদ সহ বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দফায় দফায় বৈঠক হলো। চূড়ান্তভাবে যখন জোট হবে ঠিক সেই সময় লন্ডন থেকে বার্তা এলো জোটে থাকবে না অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠন করতে হবে ‘জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট’। বিএনপির অনেক নেতাই সেদিন লন্ডনের ‘ওহী’ তে বিস্মিত হয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন আওয়ামী বিরোধী, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। তার সাথে আওয়ামী লীগের বিরোধ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ড. কামাল হোসেন মনে করেন, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত। আর বিএনপি হলো বঙ্গবন্ধুর হত্যার বেনিফিসিয়ারী। জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী। বিএনপি ৭৫ এর নারকীয় হত্যাকান্ডকে সমর্থন করে। এটাই তাদের রাজনৈতিক অস্তীত্বের শেকড়। তারা ৭৫ এর খুনী এবং ৭১ এর ঘাতকদের লালন পালন করে। এটাই তাদের রাজনীতির মূল ভিত্তি। ৭৫ এর শোকাবহ দিনে কেক কেটে জন্মদিনের বীভৎস, অরুচীকর উৎসব করে। এই দলটি যখন ড. কামাল হোসেনকে নেতা হিসেবে বরণ করে নিলো, তখনই বিএনপির অনেক নেতাই মিউ মিউ করে তার প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু বিএনপির হীরক রাজা কারো কথা শোনেন না। তিনি শুধু নির্দেশ দেন। নির্বাচনে শোচনীয় বিপর্যয়ের পরও বিএনপিতে দেখা গেল উদ্ভট সিদ্ধান্ত। প্রথমে জানানো হলো, তারা (বিএনপি) এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দল থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা শপথ নেবেন না, সংসদে যাবেন না। কিন্তু কদিন পরই লন্ডন থেকে নতুন বার্তা এলো। এবার পুরোপুরি ইউ টার্ন। বলা হলো সংসদে যেতে হবে, শপথ নিতে হবে। এভাবেই চলছে বিএনপি।

    এবার নির্বাচনের আগেও চললো নাটকের পর নাটক। বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যেই হঠাৎ করে ২৮ অক্টোবরের আত্মঘাতী নাশকতা কেন করা হলো? লন্ডনের নির্দেশে। আন্দোলন যখন স্তিমিত, নেতা-কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন অসহযোগ আন্দোলনের পাগলামী সিদ্ধান্ত কে নিলো? লন্ডনে বসে থাকা বিএনপির মহা ক্ষমতাধর ব্যক্তি। এভাবে উদহারণ দিলে সেই তালিকা শেষ হবে না। এক ব্যক্তির ভুলের মাশুল দিচ্ছে বিএনপি। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা দল। আর রাজনীতির নামে নব্য হীরক রাজা করছেন ব্যবসা। দল এবং কমিটিকে রীতিমতো পণ্য বানিয়ে বেচা কেনায় নেমেছেন এই মুর্খ রাজা। বিএনপিতে কখন কোন সিদ্ধান্ত আসছে কেউ জানে না। দেশের বাস্তবতা, কর্মীদের মনোভাব, অভিজ্ঞ নেতাদের পরামর্শ মূল্যহীন। লন্ডনে বসে যা মনে চায় তাই করছেন তারেক জিয়া। বিএনপিতে তিনি এখন হীরক রাজা। হীরক রাজার মতোই স্তাবকদের প্রশংসায় বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারছেন না। নিজে নিরাপদ দূরত্বে থেকে তিনি কর্মীদের ফেলে দিচ্ছেন অগ্নিকুন্ডে। কিছু চাটুকাররা তার সব কাজের প্রশংসা করছে। তাকে নিয়ে ধন্য ধন্য করছে। তার সমালোচনা করা মানেই কচু কাটা হওয়া। তার বিরোধীতা মানেই বহিষ্কার। নেতা কর্মীরা অনাহারে অর্ধাহারে থাকলেও তাকে খাজনা দিতেই হবে। খাজনা না দিলেই পেতে হবে সাজা। খাজনার টাকা দিয়ে লন্ডনে আয়েশী জীবন কাটাচ্ছেন একালের হীরক রাজা। সত্যজিৎ রায় যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে নির্ঘাত এই মুর্খ নেতার উপর হীরক রাজার নতুন সিক্যুয়াল বানাতেন।

    সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close