ইউক্রেন ন্যাটোর মধ্যে গেলো কি না গেলো, তাতে তোর কি!
অনেকের মতো বৃহস্পতিবার রাতে রহমান সাহেবও ঝর্ণা বেগমের অপেক্ষায় এপাশ ওপাশ করে জেগে আছেন। আর ঝর্ণা বেগম প্রতিদিনের রুটিন মতো টেলিভিশনের পর্দায় ইউটিউব না দেখে আজ খবর শুনছেন। খবর মানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ।
এহেন পরিস্থিতিতে রহমান সাহেবের মেজাজ গেলো বিগড়িয়ে।কতক্ষণ আর জেগে থাকা যায়। ঝর্না বেগমের উপর রেগে গেলেও তা প্রকাশের রিস্ক নিতে পারলো না রহমান সাহেব। তাঁর রাগ গিয়ে পড়লো রাশিয়ার উপর।
সম্পর্কিত খবর
ঝর্না বেগমকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগলো "এই শালা রাশিয়া একটা আগ্রাসনমুখী দেশ। আরে ব্যাটা, ইউক্রেন ন্যাটোর মধ্যে গেলো কি না গেলো, তাতে তোর কি? এটা ইউক্রেনের স্বাধীনতার বিষয়। খামোখা ইউক্রেন দখলের একটা পায়তারা।"
রহমান সাহেবের চেঁচামেচি শুনে শান্ত ভঙ্গিমায় ঝর্ণা বেগম কিচেনে গিয়ে একটা মাছ কাটার বটি নিয়ে এসে বললো, চলো শুতে যাই। তারপর বিছানায় শুয়ে পাশে বটিটা রেখে দিলো।
চোখ বড় বড় করে রহমান সাহেব আৎকে উঠে বলে, "করছো কি ? বটি নিয়ে শুয়েছো কেনো ? এভাবেতো ঘুমানো যাবে না।"
"কেন , কি হয়েছে ? বটি নিয়ে শুয়েছিতো আমি, তোমার কি ? আমার নিজের কি কোনো স্বাধীনতা নেই ?" শান্তভাবে বলে ঝর্না বেগম।
অধিক উত্তেজিত হয়ে রহমান সাহেব ধমকিয়ে উঠে বলে, "এটা কোন্ ধরনের স্বাধীনতা। তোমার শিয়রে বটি থাকলে তো আমি টেনশনে ঘুমাতেই পারবো না। ঘুমের তালে ঐ বটিতো তুমি তোমার গলায় না মেরে আমার গলাতেই লাগিয়ে ফেলবে। আমি কি এসব বুঝি না। এসব স্বাধীনতা স্বাধীনতা মারাইয়ো না। বটিটা রেখে আসো।"
এবার ঝর্না বেগম শোয়া থেকে উঠে বসে। বলে, "দ্যাখো, তুমি তোমার বউয়ের পাশে বটি থাকায় আৎকে উঠেছো। বউকেও বিশ্বাস করতে পারছো না। এখন বলো, ইউক্রেন যদি তার স্বাধীনতা এস্তেমাল করে ন্যাটোকে পাশে রাখে অথবা ন্যাটোতে জয়েন করে তখন রাশিয়ার কি করা উচিৎ।"
ঝর্না বেগমের কথা শুনে রহমান সাহেব ভুলে গেলো, আজ বৃহস্পতিবার রাত। বরং মনে পড়লো, আগামীকাল শুক্রবার। ভোরে উঠে ফজরের নামাজ পড়তে হবে। কোনো ঝামেলায় না গিয়ে ঘুমানোই উত্তম।
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা
পূর্বপশ্চিম- এনই