পোশাক খাতে সহযোগিতা বাড়াবে সুইডেন
সুইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে এবং এর বেশিরভাগই তৈরী পোশাকের, এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে বলেছেন, তার দেশ এ খাতে সহযোগিতা বাড়াবে।
একইসঙ্গে, তারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং পরিবেশের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলোকে টেকসই রাখার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে চায়।
সম্পর্কিত খবর
মঙ্গলবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান সুইডিশ রাষ্ট্রদূত। এ সময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের সহজ উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চান। তিনি বলেন, ‘আমরা এলডিসি থেকে সহজভাবে উত্তরণের জন্য সুইডেনের সমর্থন ও সহযোগিতা চাইছি।’
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা দিতে সুইডেনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। জবাবে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তাদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ সম্পর্কে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে বলেছেন, এই ডিজিটাল যাত্রায় সুইডেন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু উঠলে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না করা পর্যন্ত তাদের ফিরে যেতে বলতে পারি না।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের চাকরি হারাচ্ছে এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো ব্যবস্থা করায় ভাষানচরে রোহিঙ্গারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় উভয়ের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে আমরা কক্সবাজারে আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিশ্চিত করেছি।
প্রায় সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদারতার প্রশংসা করেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত।
কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে বাংলাদেশে আসার কথা উল্লেখ করে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত ব্যবস্থাপনা দেখিয়েছে। আমি বাংলাদেশের সফল কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেছি, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশী নারীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও শক্ত-সামর্র্থ।
রাষ্ট্রদূত জানান, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের আগ্রহের খাত এবং তারা এসব খাতে আরো উন্নতি ও স্বচ্ছতা আনার উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা বাড়াতে চান।
সুইডিশ রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
