• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০ প্রতিষ্ঠানের ৩০০ কোটি টাকা ‘পাচার’

প্রকাশ:  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

দেশের ১০টি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পোশাক রপ্তানির আড়ালে তিন কোটি ৫৩ লাখ ৬৬,১১৮ ডলার বা প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার সাতটি, গাজীপুরের দুটি ও সাভারের একটি প্রতিষ্ঠান।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

সম্পর্কিত খবর

    দেখিয়ে অর্থপাচার করেছে।

    প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড (আশুলিয়া, সাভার)

    প্রতিষ্ঠানটি মোট ৩৯১টি রপ্তানি চালানের মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে মোট ৩,০৮০ মেট্রিক টন টি-শার্ট, প্যান্ট, পাজামাসহ বিভিন্ন পণ্য ছিল। যা সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। রপ্তানি হওয়া এসব পণ্যের মূল্য প্রায় এক কোটি আট লাখ ৪১,৬৯৯ মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯২ কোটি চার লাখ ৬০,২৪৫ টাকা)।

    ফ্যাশন ট্রেড (গুলশান, ঢাকা)

    এই প্রতিষ্ঠানটির মোট ২৪৬টি রপ্তানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে ১,৭৭৯ মেট্রিক টন টি-শার্ট, প্যান্ট, টপ, পাজামাসহ বিভিন্ন রকমের পণ্য ছিল। এসব পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, সুদান ও মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। পণ্যগুলোর মূল্য প্রায় ৮০ লাখ ৫১,৬৪০ মার্কিন ডলার (৬৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪,২৩৬ টাকা প্রায়)।

    এম ডি এস ফ্যাশন (উত্তরা, ঢাকা)

    এই প্রতিষ্ঠানটির ১৮২টি রপ্তানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। চালানগুলোতে ১,৩৭৬ মেট্রিক টন টি-শার্ট ছিল; যার অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, কাতার ও ফিলিপাইনে রপ্তানি

    অভিযুক্ত ১০ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো- প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড (আশুলিয়া, সাভার); ফ্যাশন ট্রেড (গুলশান, ঢাকা); এমডিএস ফ্যাশন (উত্তরা, ঢাকা); হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর), থ্রি-স্টার ট্রেডিং (বনানী, ঢাকা); ফরচুন ফ্যাশন (মিরপুর, ঢাকা); অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড (কচুক্ষেত, ঢাকা); পিক্সি নিট ওয়্যারস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর); স্টাইলাইজ বিডি লিমিটেড (শাহবাগ, ঢাকা) এবং ইডেন স্টাইল টেক্স (খিলক্ষেত, ঢাকা)।

    কাস্টমস গোয়েন্দা জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অভিনব কায়দায় রপ্তানি জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। তদন্তকালে দেখা গেছে, এই ১০ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিগত সময়ে ১,২৩৪টি চালানে এমন জালিয়াতি করেছে, যার প্রমাণও পাওয়া গেছে।

    রপ্তানি সম্পন্ন হওয়ার এসব চালানের বিপরীতে পণ্যের পরিমাণ ৯,১২১ মেট্রিক টন; যার বিপরীতে প্রত্যাবাসনযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য পরিমাণ তিন কোটি ৫৩ লাখ ৬৬,৯১৮ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩০০ কোটি টাকা প্রায়)।

    প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট দলিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, পোলো শার্ট প্রভৃতি পণ্য রপ্তানি করে। আর এর আড়ালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি

    করা হয়েছে। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ৫১ লাখ ৮২,৫৮৬ মার্কিন ডলার (৪৪ কোটি ১ হাজার ৫৫১ টাকা প্রায়)।

    হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড (টঙ্গী, গাজীপুর)

    প্রতিষ্ঠানটির ১৫৬টি রপ্তানি চালানে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে ১,১৬১ মেট্রিক টন টি-শার্ট রপ্তানি করা হয়েছে। যার অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, কাতার, নাইজেরিয়া, কুয়েত ও মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এসব চালানে রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য প্রায় ৪৭ লাখ ৮৯,৬০৬ মার্কিন ডলার (৪০ কোটি ৬৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬ হাজার টাকা প্রায়)।

    থ্রি-স্টার ট্রেডিং (বনানী, ঢাকা)

    এই প্রতিষ্ঠানটি ১২০টি রপ্তানি চালানের মাধ্যমে জালিয়াতি করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। চালানগুলোতে ৮১৬ মেট্রিক টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। যার অধিকাংশই মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, কানাডা, মিসর প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। চালানগুলোতে রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ ৫৩,১০৮ মার্কিন ডলার (২৫ কোটি ১২ লাখ ৮ হাজার ৮৬৯ টাকা প্রায়)।

    ফরচুন ফ্যাশন (মিরপুর, ঢাকা)

    ৫৯টি চালানের মাধ্যমে জালিয়াতি করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। চালানগুলোতে ৪৩৫ মেট্রিক টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। এসব পণ্যের অধিকাংশই সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, মিসর ও কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ১৫ লাখ ২৪,৮১৩ মার্কিন ডলার (১২ কোটি ৯৪ লাখ ৫৬,৬২৩ টাকা প্রায়)।

    অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড (কচুক্ষেত, ঢাকা)

    এই প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ৪২টি রপ্তানি চালানের মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব চালানে ১৯৫ মেট্রিক টন টি-শার্ট রপ্তানি করেছে। যার বেশিরভাগই সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলজিয়াম, নাইজেরিয়া, জর্জিয়া ও মালয়েশিয়াসহ প্রভৃতি দেশে রপ্তানি হয়েছে। এসব পণ্যের মূল্য ৮ লাখ ৭৭,৪৭০ ডলার (৭ কোটি ৪৪ লাখ ৯৭,২০৩ টাকা প্রায়)।

    রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close