• সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দেশে পোশাক শ্রমিক ৫০ লাখ

প্রকাশ:  ২৩ জুন ২০২৪, ১৯:৩১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

দেশে তৈরি পোশাক খাতে ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন শ্রমিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। রবিবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানায় ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে ৫২.২৮ শতাংশ নারী শ্রমিক। অর্থাৎ নারী শ্রমিক ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫৯ জন। বিকেএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, নিট সেক্টরে ১৭ লাখ ২৫৫ জন শ্রমিক রয়েছে, যার ৬২ শতাংশ অর্থাৎ ১০ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৭ জন নারী। সব মিলিয়ে দেশে তৈরি পোশাক খাতে মোট ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন শ্রমিক রয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫.৫৭ শতাংশ অর্থাৎ ২৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৬ জন নারী শ্রমিক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম জানান, ২০২২ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী তৈরি পোশাক খাতে মোট লোকবল ৪৩ লাখ ১৬ হাজার। যার ৩৭.৫১ শতাংশ অর্থাৎ ১৬ লাখ ১৯ হাজার জন নারী শ্রমিক।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক বিদেশে রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ছিলে ১০.২৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৪৩.৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

প্রতিমন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯-এর প্রভাব, বৈশ্বিক মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজার আমেরিকা ও ইউরোপে মূল্যস্ফীতি প্রভৃতি কারণে রফতানি আয় অর্জনে শ্লথ গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পণ্যের চাহিদার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে বাংলাদেশে সরবরাহকারী হিসেবে রফতানি খাতে বিশ্ববাজারের চাহিদা পূরণে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ার কারণে রফতানি প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, কানাডা, জাপান প্রভৃতি দেশে এ খাত থেকে রফতানি আয় অর্জনে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।

গত এক যুগের মধ্যে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। সরকারি দলের মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৮.৬৯ শতাংশ, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬.৭৮ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭.৩৫ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬.৪১ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৫.৯২ শতাংশ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫.৪৪ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫.৮৮ শতাংশ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫.৪৮ শতাংশ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫.৬৫ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫.৫৬ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬.১৫ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯.০২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিশ্বের ২১০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেন রয়েছে। এসব দেশের মধ্যে ৮২টির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে চীনের সঙ্গে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৭ হাজার ১৪৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ হাজার ২৩৯ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

নাটোর-১ আসনের আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ ছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

তিনি জানান, সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ২০১১-১২ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৬৭০ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ৩৬২ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে এসব দেশের সঙ্গে আমদানি ৫ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ১০৩ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের শাম্মী আহমেদের প্রশ্নের জবাবে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তামাক ও মদ জাতীয় পণ্য ছাড়া সব পণ্যে শুল্কমুক্তি সুবিধা লাভ করায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি লাঘব হচ্ছে এবং ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মে পর্যন্ত পণ্য খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫১ হাজার ৫৪২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার। এ সময়ে সেবা খাতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার।

রিমেলে ৭৪৮২ কোটি টাকার ক্ষতি

সাতক্ষীরা-৪ আসনের এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমেলের তাণ্ডবে সারা দেশে টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম-১ আসনের মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমেলে মৃতের সংখ্যা ২০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮১৭ জন। দুর্যোগ মোকাবিলায় নগদ ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিন টন চাল, ১১ হাজার ৫০০ ব্যাগ শুকনো খাবার, দুই কোটি ৪৫ হাজার টকার শিশু খাদ্য, দুই কেটি ৪৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য, ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহ মঞ্জুরি বাবদ ৯ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

১৫ বছরে ১১ লাখ ১৪ হাজার নারী কর্মী বিদেশে

সংরক্ষিত আসনের পারভীন জামানের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গত ১৫ বছরে অর্থাৎ ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত (১১ জুন ২০২৪) ১১ লাখ ১৪ হাজার ৩১২ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি নারী কর্মী গেছেন বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।

ঢাকা-১৪ আসনের মাইনুল হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ৫ লাখ মেট্রিক টন ধান, ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৪৯ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, এক লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রফতানি,গার্মেন্টস,সংসদ অধিবেশন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close