• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মসলার বেড়ে যাওয়া দাম এখনও কমেনি

প্রকাশ:  ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ২১:০৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

মুসলিমদের প্রধান উৎসব দুই ঈদকে ঘিরে প্রতিবছরই অস্থির হয়ে ওঠে মসলার বাজার। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। রোজার আগেই কয়েক ধাপে বেড়েছে মসলার দাম। পাইকারি বাজারে সেই দাম এখনও কমেনি। অতীতের রেকর্ড ভেঙে গত কয়েক মাস আগে জিরার দাম ওঠে কেজিপ্রতি ১২০০ টাকায়। এলাচের দাম কেজি প্রতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫০০ টাকা। তবে কিছু মসলার আমদানি স্বাভাবিক হওয়ায় দেশের বাজারেও খানিকটা কমেছে দাম।

রোজার শুরুতে হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া জিরা পাইকারি বাজারে এখন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার ঘরে। তবে পাইকারি বাজারে কমলেও খুচরা বাজারে এর দাম কমেনি। খুচরা বাজারে এখনও জিরা কেজিপ্রতি হাজার টাকার ওপরেই বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বাজারে নতুন করে দাম না বাড়লেও এখনও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে এলাচ, দারচিনি ও লবঙ্গ।

তবে দেশি পেঁয়াজ, দেশি রসুন, শুকনা মরিচ, দারুচিনি, হলুদসহ কয়েকটি মসলার দাম কমেছে।

রাজধানীর পাইকারি মসলার বাজার মৌলভীবাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি জিরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, এলাচ মানভেদে ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার, দারচিনি ৪০০ থেকে ৪৫০, লবঙ্গ ১ হাজার ৩৫০ এবং গোলমরিচ ৭৫০ থেকে ৭৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কালো গোল মরিচ ৮০০ টাকা, সাদা মরিচ ১ হাজার ২০০ টাকা, আলুবোখারা ৫৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগে এগুলোর দাম ৫০-১২০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

খুচরা বাজার পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার, কলতাবাজার, রায়সাহেব বাজার, লালবাগ,ধোলাইখাল, ওয়ারিসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি জিরা ৮৫০ থেকে ১০০০ টাকা, এলাচ ২৫০০ থেকে ৩৪০০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ থেকে ৫৫০, লবঙ্গ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রোজার আগে আগে পেঁয়াজের দাম ১০০ পার হয়েছিল। তবে ধীরে ধীরে তা কমে এসেছে। ভারত থেকেও এখন পেঁয়াজ আসছে। এখন বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, দেশি রসুন কেজি ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানীকৃত রসুন কেজি ২২০ টাকায় ও আদা মানভেদে কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে। বড় সাইজের দেশি রসুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা এবং মিয়ানমারের আদার দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।

মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মেসার্স সাথী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুস সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, পর্যাপ্ত আমদানি হওয়ার কারণে দেশের বাজারে কমেছে কিছু মসলার দাম। গত ঈদে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হওয়া জিরার দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। লবঙ্গের দাম মাঝে বেড়ে গেলেও এখন আবার কমে গেছে। এলাচ ও দারচিনির বাজারে কোনও পরিবর্তন নেই। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাকি সব মসলার দাম অপরিবর্তিত। আমরা যদি আমদানিকারকদের থেকে কম বললে কিনতে পারি তাহলে পাইকারিতে আরও কম দামে বিক্রি করতে পারবো।

এদিকে পাইকারিতে যে সব মসলার দাম কমেছে তার প্রভাব খুচরা বাজারে নেই। বেশ কয়েকজন পাইকারি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় অন্তত চার থেকে পাঁচটি মসলার দাম কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন কোনও মসলার দামি কমেনি।

কলতা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. মেহেদী গণমাধ্যমকে বলেন, পাইকারিতে যেই সামান্য দাম কমে সেটা খুচরা বাজারে তেমন কোনও ব্যবধান তৈরি করে না। কারণ মসলা তো আমরা ২০ টাকা বা ৫০ টাকা পরিমাণ বিক্রি করি। কেউ তো আর কেজি দরে মসলা কেনে না। আমরা পাঁচ কেজি মসলা কিনলে আমাদের অনেক দিন চলে যায়। আমাদেরও তো ব্যবসা করতে হবে। নয়তো চলবে কী করে। সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি। আমাদের তো সবকিছু সামঞ্জস্য করে চলতে হয়।

খুচরা বাজারে মসলা কিনতে আসা মেরি নামের এক ক্রেতা বলেন, সুস্বাদু খাবার তৈরির প্রধানতম গরম মসলার একটি জিরা। কিন্তু জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ ও এলাচের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি আমাদের ওপর চাপ তৈরি সৃষ্টি করেছে। পত্রপত্রিকায় শুনি এটার দাম কমেছে ওটার দাম কমেছে। কিন্তু দোকানে আসলে কোনও কিছুর দাম কম দেখি না। সরকার থেকে পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রণ বা পরিদর্শনের জন্য যেমন মনিটরিং সেল থাকে, তেমনি খুচরা বাজার দেখাশোনার জন্য যদি মনিটরিং সেল থাকতো তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অযথা ক্রেতাদের থেকে বেশি দামে বিক্রি করতে পারতো না।

মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে প্যাকেটজাত মসলার। বড় হচ্ছে প্যাকেটজাত মসলার বাজারও। একটা সময়ে গ্রামাঞ্চলে মেশিনে হলুদ, মরিচ গুঁড়া করা হলেও এখন শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও প্যাকেটজাত গুঁড়া মসলার একটা কদর তৈরি হয়েছে। প্যাকেটজাত মসলার বিষয়ে আজমির হোসেন নামের একজন ক্রেতা বলেন, মহিলারা বাসায় এখন প্যাকেট মসলা নেওয়ার কথা বলে। অন্যসব মসলা নিলে বাটা বাটিতে ঝামেলা। এজন্য বাসায় সব সময় প্যাকেট মসলা নেওয়া হয়। পরিশ্রম আর দাম তুলনা করলে প্যাকেট মসলা তুলনামূলক সাশ্রয়ী।

রাজধানী,ঈদুল ফিতর,দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,পণ্য
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close