• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

আজও রহস্যময়ী সুচিত্রা সেন

প্রকাশ:  ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ২১:১৫
বিনোদন ডেস্ক

সুচিত্রা সেন, ডাক নাম রমা। আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিচ্ছবি তিনি। তার রোমান্টিক দৃষ্টির মধ্যে ছিল সম্মোহনী শক্তি, যার আকর্ষণে দর্শকরা হতেন মোহাবিষ্ট। গভীর চোখের চাহনি, কথা বলার ভঙ্গি ও মোহময়ী হাসির মধ্যে গড়ে উঠেছিল এক অসাধারণ স্ক্রিন পার্সোনালিটি। কত নায়িকা এলো, গেল কিন্তু সুচিত্রা সেন একজনই। সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস ১৭ জানুয়ারি। ২০১৪ সালের এই দিনে তিনি অমৃতলোকে চলে যান।

আটপৌরে বাঙালি নারীও যে আবেদনময়ী আর অনন্য হয়ে উঠতে পারেন, সুচিত্রা সেন যেন তার প্রকৃত উদাহরণ। বাংলাদেশেই সুচিত্রার জন্ম। বাংলাদেশ ছেড়ে গেলেও এখানকার সোঁদা মাটির গন্ধ সবুজ-শ্যামল প্রান্তরের মায়াবী হাতছানি ভুলতে পারেননি তিনি।

১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনায় জন্মে ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা সুচিত্রা সেন । পাবনা মধ্য শহরের দিলালপুর মহল্লার পাবনা-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উত্তরে পৈতৃক বাড়িতে কেটেছে সুচিত্রা সেনের শৈশব ও কৈশোরের দিনগুলো। সুচিত্রা সেন পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। পরে কর্ম-যোগ্যতায় পদোন্নতি পেয়েছিলেন হেড ক্লার্ক হিসেবে। দেশ ভাগের সময় বাড়িঘর ফেলে সুচিত্রা সেনের বাবা সপরিবারে ভারতে চলে যান।

বাংলা সিনেমার অঙ্গনে সুচিত্রার পদার্পণের পর শুরু হয়েছিল নতুন এক অধ্যায়ের। পাশের বাড়ির অতি চেনা-জানা ছেলে উত্তমের সঙ্গে স্বপ্নসুন্দরী সুচিত্রার ভালোবাসার গল্পে বাঙালি খুঁজে পেয়েছিল কবিতার বনলতা সেনকে! উত্তম কুমারের সঙ্গে তাঁর জুটি হয়ে উঠেছিল চিরন্তন প্রেমের প্রতীক। একটা সময় গেছে যখন উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত বিভিন্ন ছবির অনুকরণে নবদম্পতিরা ফটো স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তুলে আনন্দ পেতেন।

‘সপ্তপদী’, ‘দীপ জ্বেলে যাই,’ ‘হারানো সুর’, ‘সাত পাকে বাঁধা’ এবং হিন্দি ‘ দেবদাস’, ‘আঁধি’ ছবিগুলো এখনো দর্শকরা দেখতে পছন্দ করেন। কখনো গ্ল্যামারাস নায়িকা, কখনো স্নেহময়ী মা হিসেবে অভিনয় করেছেন। নানা চরিত্রে পর্দায় হাজির হতেন তিনি। যা ছিল চোখে পড়ার মতো। ২৬ বছরের অভিনয় জীবনে ৬১টি ছবিতে অভিনয় করেছেন সুচিত্রা সেন। তার সম্পর্কে আজও মানুষের নানা কৌতূহল। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে বাংলা ছবিতে যেন একটা নতুন মাত্রা এনেছিলেন।

সুচিত্রা সেন নামটিতেই যে অনিন্দ্যসুন্দর অবয়ব ভেসে ওঠে, তার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে রূপকথার রাজকন্যাকে। কোনো এক পরীর জাদুতেই হয়তো সুচিত্রা জয় করে নিয়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষের মন। সুচিত্রার চিবুকের তিল, সুবিন্যস্ত দাঁত, টিকালো নাকের চেয়েও দর্শক ভালোবেসেছিলেন তাঁর বাঙ্ময় চোখ আর সেই চোখের ভাষা। থ্রি কোয়ার্টার হাতার কাজ করা ব্লাউজ, শাড়িতে লেস এমনকি শুধু বেণিবাঁধা চুলকে সামনে নিয়ে আসার স্টাইলে পঞ্চাশের দশকেও সুচিত্রা পুরোপুরি আধুনিক এবং আজও তিনি ভক্তদের কাছে রহস্যময়ী রয়ে গেছেন।

পূর্বপশ্চিম- এনই

সুচিত্রা সেন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close