গবেষণায় প্রায় তিন গুণ বরাদ্দ বাড়ালো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
![](/assets/news_photos/2024/06/27/Untitled-1 copy-image-1719501317.jpg)
গবেষণা ও সেবা সহায়তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২০১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছে। এরমধ্যে ১৫৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ফলে ঘাটতি থাকবে ৩৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে এক বিশেষ সিন্ডিকেটে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন জবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিমের সভাপতিত্বে ৯৬তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সম্পর্কিত খবর
২০১ কোটি টাকার বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে গবেষণা-উদ্ভাবন মিলিয়ে এ খাতে মোট বরাদ্দ বাজেটের ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এরমধ্যে পিএইচডি গবেষণার জন্য এই প্রথমবারের মতো ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত বাজেটে গবেষণা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রায় তিনগুণ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবার গবেষণা খাতে।
বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাজেটে সেবা সহায়তা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেধাবৃত্তির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা গত বছরে ছিল ৬৫ লাখ টাকা। পরিবহনে ৩ কোটি ৮০ লাখ, লাইব্রেরির জন্য ২৭ লাখ— যা গত বছরে ছিল ৭ লাখ এবং চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ যা আগে ছিল ১০ লাখ টাকা। শিক্ষা সফর, দান ও অনুদান, অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এ খাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ কোটি ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট বাজেটের বরাদ্দের ৩.৫০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সেবা সহায়তায় বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.০৮ শতাংশ। এদিকে প্রস্তাবিত বাজেটের ৫৮ দশমিক ২ শতাংশই অর্থাৎ ১১৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় হবে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশনে।
বাজেট উপস্থাপনের সময় কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পেলেও চাহিদা অনুযায়ী ইউজিসি থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় খাত ওয়ারি বাজেট বণ্টন করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। আমাদের সম্পদ সীমিত, অভ্যন্তরীণ অর্থ প্রাপ্তির উৎসও সামান্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় বহুলাংশে নির্ভর করতে হয় সরকারি বরাদ্দের ওপর।
কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইউজিসির মঞ্জুরিকৃত মূল বাজেট বরাদ্দ ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ৪২ কোটি ২৫ লাখ টাকা বেশি। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার তুলনায় ইউজিসি অনেক কম বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে। এমন আর্থিক চাপের মধ্যে একটি ভালো বাজেট তৈরি করা আক্ষরিক অর্থেই কষ্টসাধ্য।বাজেট ঘাটতির বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ বলেন, আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে এ মুহূর্তে ঘাটতি মেটানো সম্ভব না। ইউজিসির ওপর নির্ভর করতে হবে আমাদের।
উল্লেখ্য, এবছর বিগত বছরের থেকে প্রায় অর্ধ শতকোটি টাকার বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মোট ১২৩ কোটি ৫৯ লাখ, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১৩০ কোটি ১৯ লাখ টাকার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।