• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যা

অন্ধকারে পুলিশ, সন্দেহের তালিকায় প্রেমিকা

প্রকাশ:  ০৯ নভেম্বর ২০২২, ২১:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচনে এখনো অন্ধকারে পুলিশ। মেলেনি কোনো ক্লু।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কার সম্পৃক্ততা রয়েছে-সেটি এখনও জানতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তবে তাদের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন ফারদিনের প্রেমিকা। হত্যাকাণ্ডটি প্রেমঘটিত কারণে হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন ফারদিনের স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও তদন্ত কর্মকর্তারা। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন ফারদিনের পরিবারের সদস্যরা।

এ ঘটনায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে বুধবার (৯ নভেম্বর) ফারদিনের বাবা কাজী নুরুউদ্দিন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রামপুরা থানায় তিনি হত্যা মামলা করবেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে নানামুখী তদন্ত চলছে। রামপুরা, নারায়ণগঞ্জসহ আরো কিছু এলাকার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ফারদিনের পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যকাণ্ড। তাদের এ দাবিকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সন্দেহের তালিকায় ফারদিনের প্রেমিকাকেও রাখা হয়েছে। তার প্রেমিকার ভাষ্য অনুযায়ী রামপুরা থেকে আলাদা হওয়ার পরে ফারদিন কোন কোন এলাকায় অবস্থান করেছিলেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বুধবার রাত আটটার দিকে রামপুরা থানার ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা করার জন্য এখনো কেউ থানায় যোগাযোগ করেনি। তবে, ফারদিনের বাবা মামলা করবেন বলে শুনেছি। এ ছাড়া হত্যার রহস্য নিয়ে এখন সঠিক কিছু জানতে পারিনি। তবে আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। বিভিন্ন ক্লু নিয়ে কাজ করছি।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি রাজীব আল মাসুদ বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। তবে এখনও কোনো কু পাওয়া যায়নি।’

পুলিশ, ডিবির পাশপাশি ফারদিন হত্যার তদন্ত করছে র‌্যাব। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারাও এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য জানাতে পারেনি। র‌্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ফুটেজ আমরা এখনো পাইনি। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। কিন্তু কোনো ক্লু নেই। তবে রহস্য উদ্্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফারদিনের প্রেমিকা জানিয়েছেন, চার বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। পাশাপাশি তারা একটি ডিবেট ক্লাবেরও সদস্য। ওই তরুণী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। ৪ নভেম্বর ঘোরাঘুরির পর রাত সোয়া ১০টায় ওই তরুণী বাসায় ফিরে যান বলে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন।

ওই তরুণীসহ অন্যান্যদের সঙ্গে ফারদিনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরেই তদন্ত করছে পুলিশ। কীভাবে ফারদিনের মৃত্যু হলো-সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ফারদিনের বাবা কাজী নুরুউদ্দিন বলেন, ‘ছেলের শোকে আমরা সবাই কাতর। আমাদের মানসিক অবস্থা ভালো না। তাই বৃহস্পতিবার রামপুরা থানায় মামলা করব। এ ছাড়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করছে। সব সংস্থাই আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। আশা করি তারা রহস্য উন্মোচন করতে পারবে।’

নিখোঁজের তিন দিন পর গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের পেছন দিক থেকে ফারদিনের পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হন তিনি। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার। নিখোঁজ হওয়া আগে ফারদিন তার বান্ধবীর সঙ্গে ছিলেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

বুয়েট,ফারদিন নূর পরশ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close