• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সংস্কারহীন জরাজীর্ণ নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়

প্রকাশ:  ২৩ জুন ২০১৮, ০১:১২
ওমর ফারুক/ রুহুল আমিন ফারুক

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের একটি হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটি প্রতিষ্ঠার পর বর্তমানে সবচেয়ে নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেখানে আওয়ামী লীগ নতুন দিনের প্রত্যয়ে নতুন কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে চলেছে, সেখানে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রায় ১০ বছর ধরে পড়ে আছে সংস্কারবিহীন জরাজীর্ণ অবস্থায়।

১৯৯৩ সালে বিএনপি’র প্রধান কার্যালয় ধানমন্ডি থেকে নয়াপল্টনে স্থানান্তরিত হয়। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনও করা হয়নি।তৎকালীন বিএনপি সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন চৌধুরী নেতৃত্বে বর্তমান ভবনটি দখল করেন বিএনপি নেতৃত্বধীন সরকার। বর্তমানে ৬ তলা ভবনটির বেহাল দশা। গত এক দশক ধরে ভবনটির কোনো সংস্কার হয়নি। একসময় যেখানে হরদম নেতাকর্মীদের ভিড় লেগেই থাকতো, সেখানে এখন মাঝে মধ্যে সন্ধ্যায় বাতি জালানোর মতো থাকে না।

অাশির দশকেই নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থাপন করা হয় দাবি করে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের অফিস থেকে জাগোদল পরিচালনা করতেন প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে নয়াপল্টনস্থ নিজস্ব কার্যলয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বঙ্গভবন থেকে এখানে এসে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতেন ।১৯৭৯ সালের দিকে দলের সব অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম ও দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নয়াপল্টন অফিস কেন্দ্রীক অানাগোনা বাড়তে থাকে।

তিনি আরো বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যার পর এরশাদ ক্ষমতায় আমলে জাতীয় পার্টিরনেত্রী রিজিয়া বেগম এর মামলার ফলে বিএনপিকে নয়াপল্টনস্থ কার্যলয় ছাড়তে বাধ্য হয় সেই থেকে টানা ৮ বছর দলটি কার্যলয়ে ঘেসতে পারেনি। এরশাদ পতনের পর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় ফিরে আসলে ১৯৯৩ সালে পল্টনের দলিয় কার্যলয় পূর্ণ রায় দখলে নেয় দলটি।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ধানমন্ডি পুরাতন কার্যালয় থেকে গাড়ি করে সকল মালামাল নিয়ে পল্টন অফিসে সরাসরি কার্যক্রম আরম্ভ করে বিএনপি। সবমিলিয়ে বর্তমানে ভবনটিকে জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া বর্তমানে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ডিজিটাল ব্যানারে ঢাকা পড়েছে মূল ভবনটি। সড়কের দুদ্বারে রয়েছে এ রকম অনেক ব্যানার ফ্যাস্টুন। এ সকল ব্যানার ফ্যাস্টুনের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের নাম জানেন না কেন্দ্রীয় নেতারা। তারপরেও তাদেরকে দলের শুভাকাঙ্খী মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ।

বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ পথের পাশেই রয়েছে শহীদ জিয়ার ভাস্কয। ভাস্কর্যের উপরে লেখা আছে ‘মহান স্বাধীনতার ঘোষক’। ডানে রয়েছে বিএনপি সামগ্রী প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র। সে কেন্দ্র রয়েছে বিএনপির কাযক্রমের সকল ডকুমেন্ট, সিডি, বই ইত্যাদি।

২য় তলায় তালাবন্ধ অবস্থায় চেয়ারপার্সন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কার্যালয় দেখা গেছে। এছাড়াও ৩য় তলায় রয়েছে কনফারেন্স রুম, মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব ও দাফতরিক কাযক্রমের অফিস। কনফারেন্স রুমে জিয়াউর রহমান মাঝে খালেদা জিয়া এবং পরে তারেক জিয়ার ছবি একই ফ্রেমে বাধাই করা ছবি ঝুলানো রয়েছে। তবে ভিতরে ছোট একটি রুমে অবস্থানরত রয়েছে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী আহমেদ। ছোট কিসেন রুমের অবস্থাও খুব একটা সুবিধাজনক নয়। অপরিস্কার হয়েছে আছে। দেয়ালের অবস্থাও শেওলাযুক্ত। তারপরে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আনাগোনা দেখা গেছে।

৩য় ফ্লোর অর্থাৎ ৪র্থ তলায় অন্ধকার ও তালাবন্ধ অবস্থায় দেখা গেছে বেশ কয়েকটি দলের কার্যালয়। ‘তারেকের অবৈধ সাজা বাতিল কর’, ‘খালেদার নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে’ এমন পোস্টের চারদিকের দেয়ালে লাগানো। ভিন্ন ভিন্ন রুমে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী যুবদলকেন্দ্রীয় কার্যালয়, জাতীয়তাবাদী যুবদল (ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়), জাতীয়তাবাদী যুবদল (ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কার্যালয়), জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রধান কার্যালয়। ৪র্থ ফ্লোর অর্থাৎ ৫ম তলায় তালাবদ্ধ রয়েছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)। ৫ম ফ্লোর ৬ষ্ঠ তলায় রয়েছে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার।

বিএনপি কার্যালয়
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close