• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মালয়েশিয়ায় মাস জুড়ে রামাদান মেলা

প্রকাশ:  ২৪ মে ২০১৮, ১২:০৫
আহমাদুল কবির (মালয়েশিয়া)

মালয়েশিয়ান নাগরিকরা ভোজনরসিক। বছর জুড়ে নানা খাবারের আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে রমজানেও থাকে চমক। চাই বাহারি ইফতার। তাই মালয়েশিয়া জুড়ে চলে তাদের চষে বেড়ানো। বাহারি স্বাদের ইফতারে এবারো নগরবাসীকে টানছে মারদেকায়। মাস জুড়ে বসে রামাদান মেলা।

মাহে রমজানকে ঘিরে প্রতি বছর থাকে মারদেকা মাঠে বিশেষ আয়োজন। আর এ ইফতারির স্বাদে মন ছুটে মারদেকায়। শুধু মারদেকাই নয় রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে শুরু করে সব প্রদেশেই মাহে রমজানে থাকে বিশেষ আয়োজন এবং সরকারি ও বেসরকারিভাবে আয়োজন করা হয় ফ্রি ইফতারের ব্যবস্থা। ফ্রি ইফতার ধনী-গরিব সবাই এক সঙ্গে বসে ইফতার করেন। রমজান মাস আসলেই মারদেকায় প্রতি শনি ও রোববার এ মাঠে হাজার হাজার মানুষ এক সঙ্গে বসে ইফতার করেন। এ যেন আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার বড় আয়োজন।

সম্পর্কিত খবর

    স্থানীয়রা ইফতার করেন বিভিন্ন প্রকারের হাতে বানানো পিঠা, হালুয়া জাতীয় নাশতা, সাদা ভাত, বিরিয়ানি, ফলমূলসহ মালয়েশিয়ান খাবার দিয়ে। সঙ্গে থাকে আম, তরমুজ, বাঙ্গি, কলা, পেঁপে, আপেল, আঙুর, কমলাসহ নানা রকম মালয়েশিয়ান ফল। এ মাসে বেশ অতিথি পরায়ন হয়ে ওঠে মালয়েশিয়ানরা। রমজানে মালেশিয়াতে সরকারি অফিস, আদালত দেশটির স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটায় ছুটি হয়। ক্রেতাদের জন্য আকর্ষনীয় ছাড়ের ঘোষণা করে শপিংমলগুলো। রোজার দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই তাই শুরু হয়ে যায় কেনাকাটার ধুম।

    মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা রমজান পালন করেন অনেকটা দেশিয় আমেজে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় রমজানে শ্রমিকদের নামাজ পড়ার ও রোজা রাখার সুযোগ করে দেয়া হয়। মসজিদগুলোতে বিনামুল্যে ইফতারির সুযোগ থাকে। মসজিদে মসজিদে তারাবির নামাজ পড়া হয়।

    মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা রমজান মাসে ইফতার করেন দেশিয় খাবার দিয়েই। বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোতে দেশিয় ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে ইফতারি বানানো হয়। ইফতারিতে খেজুর, জিলাপি, শরবত, জুস, হালিম, ছোলা, মুড়ি, পেয়াজু, বেগুনি, চপ, লাচ্চিসহ নানা প্রকারের খাবার রাখা হয়।

    বাংলাদেশিরা যেখানে থাকেন সেখানেই একসঙ্গে ইফতার করেন। তাই বাংলাদেশিদের আয়োজনটা বড় হয়। মালয়েশিয়ানরা অভিভূত হয় বাঙালিদের ইফতারির বিশাল আয়োজন দেখে।

    রমজান মাসে প্রতিদিন বিকেলে মালয়েশিয়ার মারদেকাসহ প্রায় সব জায়গায় বাজার রমদান নামে ইফতারি বেচাকেনার মেলা বসে। বাজার রমদানে বিভিন্ন প্রকারের মালয়েশিয়ান খাবারের সমারহ ঘটে। তবে এসব খাবার প্রবাসী বাঙালিদের খুব একটা কাছে টানে না। ইফতারির আসল আইটেমগুলো তারা বাসায় নিজেরা তৈরি করেন বা বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে আনেন।

    রমজানে মুসলমানদের দিনে প্রকাশ্যে খাওয়া মালয়েশিয়ার আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রতিবছর এ অপরাধে আটক হন অনেকে। এছাড়া পুরো রমজানে সরকারি নজরদারিতে জিনিসপত্রের দাম অন্যান্য সময়ের থেকে কম রাখা হয়। এ মাসে মসজিদগুলোতে প্রতি ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যায়। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায়। নামাজের পরে কোরআন তিলাওয়াত করতে পছন্দ করেন মালয়েশিয়ানরা। মসজিদে মসজিদে ইফতারিতে বিনামূল্যে শরবত ও বুবুর বা নরম খিচুড়ি’র ব্যবস্থা থাকে।

    দেশিয় খাবার ছাড়া ভিনদেশী খাবারে ইফতার জমে না বাংলাদেশিদের। সুদূর প্রবাসে থেকেও তাই তৃপ্তি মেটাতে ইফতারে বাঙালি খাবার-ই তাদের প্রথম পছন্দ।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close