• সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

বগুড়ায় ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশ:  ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৯:১১
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নামে আসা ঢলে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। শুক্রবার বিকালে যমুনার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বেড়ে নিচু এলাকার বাড়িঘর, রাস্তা ও ফসলি জমিতে প্রবেশ করেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে ১৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকার ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ পানবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা নৌকায় চলাচল করছেন।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সারিয়াকান্দির ইছামারা, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ি, সোনাতলার সুজাইতপুর এবং ধুনটের শহড়াবাড়ি বাঁধে ভাঙন ঝুঁকি রয়েছে। ইছামারায় ৫০০ মিটার, হাটশেরপুরে ৩০০ মিটার এবং কর্ণিবাড়িতে ১০০ মিটার এলাকা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এর আগে শহড়াবাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পারের পাশে ৩৫০ বিঘা আয়তনের চর জেগে উঠেছিল। ভাঙনের মুখে সেটির তিন ভাগের একভাগ রয়েছে। এ ছাড়া বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের টেংরাকুরায় পানির তোড়ে রাস্তা ভেঙে গেছে। এতে বন্যার পানি গ্রামে ঢুকে পড়ছে। গ্রামবাসী নানাভাবে পানি ঢোকা বন্ধের চেষ্টা করছেন।

এদিকে, সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চর সরুলিয়া, খাবুলিয়া, চর মহনপুর, পূর্ব তেকানী, মহব্বতেরপাড়া ও জন্তিয়ারপাড়া এবং পাকুল্লা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর, আচারেরপাড়া, খাটিয়ামারী, পূর্ব সুজাইতপুর ও বসুনিয়াপাড়ার বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট শুরু হয়েছে।

সোনাতলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খাতিজা খাতুন বলেন, ‘বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব পাশে ১৭টি ইউনিয়নে পানি ঢুকে পড়েছে। এখানে ২২ হাজার ৫শ পরিবারের ৭৮ হাজার ৩২৩ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান জানান, সারিয়াকান্দি উপজেলায় এক হাজার ৮৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, ভুট্টা, পাট ও বিভিন্ন সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে, জেলা প্রশাসক শুক্রবার সোনাতলা ও সারিয়াকান্দির বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি শুক্রবার সোনাতলায় ৫০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সারিয়াকান্দির বন্যা কবলিত এলাকায় ১০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার পাওয়া গেছে। যতদিন বন্যা আছে ততদিন ত্রাণ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে স্থানীয়ভাবে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।’

পানিবন্দি,বগুড়া,মানুষ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close