• রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১
  • ||

জামালপুরে পানিবন্দি ১০ হাজার মানুষ, ২৬টি বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ:  ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৯:৪৮
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে জামালপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১০ হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকাল থেকে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের ফসলের মাঠ, দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। জেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরামসহ সব নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ, ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, কুলকান্দি, পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা, মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, আদ্রা, মাহমুদপুর, নাংলা, কুলিয়া এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার চর পাকেরদহ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি। নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও এলাকায় যাতায়াতের জন্য স্থানীয় রাস্তাগুলোতে পানি উঠে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ। বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগও বেড়েছে। বন্যার কারণে মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। অনেকের বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় তারা পরিবারের সদস্য ও গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন।

এ ছাড়া কাঠারবিল এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের ৩০ মিটার অংশ বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। এতে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পাররামরামপুর, চর আমখাওয়া, ডাংধরা ইউনিয়ন এবং পাশের কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ। একই উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কে একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ভেসে যাওয়ায় খোলাবাড়ি ও গাইবান্ধা জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় মাঝারি আকারের বন্যা হওয়ার শঙ্কা আছে বলে জানালেন জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ৭৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বৃহস্পতিবার বিকালে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। আগামী এক সপ্তাহ এই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের ১০০ পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলার সাত উপজেলায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও তিন হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি আছে আমাদের।’

ইসলামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বন্যার পানি বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ায় ১২টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

একই কারণে ইসলামপুর উপজেলার ১২টি এবং মেলান্দহ উপজেলায় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তারেক মো. রওনাক আখতার।

পানিবন্দি,মানুষ,জামালপুর

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close