• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সিলেটে হকারের জায়গা দখল করে এখন গাড়ী স্ট্যান্ড

প্রকাশ:  ১৮ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৩
শংকর দত্ত, নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেট মহানগরে ফুটপাত দখল করে থাকা আড়াই হাজার হকারের ঠাই হয়েছে সিলেটের লালদিঘির পাড়ে। নগর ভবনের পেছনে লালদিঘীরপাড়ে প্রায় চার একর জায়গায় হকারদের পুনর্বাসনে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেছে নগর কর্তৃপক্ষ। এতে ফুটপাত হকার মুক্ত হলেও এই জায়গায় এখন গড়ে উঠেছে অবৈধ সিএনজি-লেগুনা স্ট্যান্ড।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে স্ট্যান্ডগুলোতে বাড়তে থাকে যানবাহনের সংখ্যা। ফলে সড়কগুলোতে সব সময় লেগেই থাকে যানজট। যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। সিলেটবাসী হকার থেকে মুক্তি পেলেও মুক্তি পাচ্ছেন না যানজট থেকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সিলেট মহানগরের বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে রাস্তা প্রশস্ত ও উন্নয়নমূলক কাজ। তবে সড়ক প্রশস্ত করায়ও সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। সড়ক দখল করে গড়ে উঠছে একের পর এক অবৈধ স্ট্যান্ড। প্রতিটি মোড়ে দুই লেনের সড়কের দুই পাশে একাধিক সারিতে সিএনজি অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর সড়কের অবশিষ্ট যে অংশটুকু থাকে তাতে কোনোমতে এক সারিতে যান চালাচল করতে পারে। তাতেও অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য। রাস্তার মাঝখানে অটোরিকশা থামিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ সেরে নেয়া, যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ অবলীলায় করে তারা। পরোয়া করে না মানুষের ভোগান্তির কথা। মোড়ে মোড়ে অবৈধ স্ট্যান্ড হওয়ায় অনেক সময় পায়ে হাঁটাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সড়ক পার হওয়ার সময় বিপদে পড়েন বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণী-পেশার কর্মজীবী মানুষজন। অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানজট লেগে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ কোর্ট পয়েন্ট, কুদরত উল্লাহ পয়েন্ট, শেখঘাট পয়েন্ট, সোবহানীঘাট, মেন্দিভাগ, উপশহর, ধোপাদীঘিরপাড়, নয়াসড়ক, শিবগঞ্জ, টিলাগড়, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, আম্বরখানা, শাহী ঈদগাহ, মেজরটিলা, সুবিদবাজার, মদিনা মার্কেট, রিকাবীবাজার, মজুমদারী, ওসমানী হাসপাতালের সামনে, মদিনা মার্কেট, বাগবাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সড়কগুলোও দখল করে সিএনজি অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠেছে।

মহানগরবাসী বলছেন, সিলেটের রাস্তা প্রশস্তকরণ করেও যানজট থেকে মুক্তি মিলছে না। বরং রাস্তা প্রশস্তকরণের পরপরই সেটি দখলের মহোৎসব চলছে। আর এই মহোৎসবের কারনে ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন নগরবাসী। নগরীর বিভিন্ন স্পটে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্ট্যান্ডগুলোর কারণে সবসময় যানজটের কবলে পড়েন নগরবাসী। এছাড়া স্ট্যান্ড থেকে সিএনজিতে ওঠলে তাদের কথা অনুযায়ী ভাড়া দিতে হয়। কম বেশি করা যায় না। চালকরাও আমাদের অপারগতা বুঝে বেশি ভাড়া দাবি করেন। মহানগরজুড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্ট্যান্ডের কারণে এক এলাকার গাড়ি অন্য এলাকার যাত্রী তুললে চালক ও যাত্রীদের হেনস্থা করেন স্ট্যান্ডের দায়িত্বরতরা। মানুষের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্ট্যান্ডগুলো। নগরবাসীর অভিযোগ এসব এলাকায় প্রশাসন থেকেও এগুলো সরানোর ব্যাপারে নেই কঠোর উদ্যোগ।

সিলেট সিটি করপোরেশনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী পূর্বপশ্চিমবিডিকে জানান, আমরা এ বিষয় নিয়ে কাজ করছি। ইতমিধ্যেই ট্রাফিক বিভাগের সাথে কথা হয়েছে। স্ট্যান্ড গুলো যেহেতু আমাদের নগরবাসী ব্যবহার করে তাই আমরা কোন কোন পয়েন্টে সল্প পরিসরে এবং শৃঙ্খল ভাবে যানবাহন রাখা সে বিষয়ে কাজ করছি। এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা।

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান পূর্বপশ্চিমবিডিকে জানান, মহানগরে গড়ে উঠা অবৈধ স্ট্যান্ড গুলোতে আমরা প্রতিনিয়তই অভিযান চালাচ্ছি। কেউ যদি সড়ক ব্যবহারের আইন না মানেন তাহলে সেসব ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করি। অনেক সময় মামলা দেই। আমাদের অভিযান শেষ হওয়া মাত্রই তারা আবার সেখানে চলে আসে। এটি একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা সড়কে শ্রীঙ্খলা আনতে কাজ করছি। তবে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সড়কের আইন মানার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে এবং আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

সিলেট,হকার,বাস স্ট্যান্ড

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close