• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
  • ||

নিহত পোশাকশ্রমিক জালালের পরিবারের পাশে এক কারখানা কর্তৃপক্ষ

প্রকাশ:  ২১ নভেম্বর ২০২৩, ২২:০০
পূর্ব পশ্চিম ডেস্ক

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীর জরুন এলাকায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত শ্রমিক জালাল উদ্দিনের স্ত্রীর চাকরি ও মেয়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছে মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানা।

সম্পর্কিত খবর

    মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুরের নয়াপাড়ায় নিহত শ্রমিকের স্ত্রী নার্গিস পারভীন ও একমাত্র কন্যা সন্তান জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম (৯) মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড কারখানায় আসেন। পরে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মেজবা ফারুকী তাদের হাতে চিকিৎসা বাবদ দেড় লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন। এছাড়াও তিনি শিশুটির লেখাপড়া ও বিয়ে পর্যন্ত সমস্ত দায়িত্ব নেন। ওই সময় নিহতের স্ত্রী চাকরি করার ইচ্ছা পোষণ করলে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকে চাকরির ব্যবস্থা করার অঙ্গীকার করেন।

    নিহত জালালের মেয়ে জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়ম মহানগরীর জরুন এলাকার গাজীপুর সিটি আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে কান্না শুরু করে। সে বলে- বাবা কাজে যাওয়ার সময় তাকে বলতো ‘বাবা তোমাকে ভালো করে লেখাপড়া করতে হবে। বড় হয়ে তোমাকে ডাক্তার হতে হবে।’ তাই আমি ডাক্তার হতে চাই।

    নিহতের স্ত্রী নার্গিস পারভীন বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন, আমি এখন অসহায়। আমি বিএ পাস করে গৃহিণী ছিলাম। এখন মাল্টিফ্যাবস্ কারখানা আমাকে চাকরি দিতে চেয়েছে। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে। এই ঋণ আমি পরিশোধ করতে পারবো না। আমার মেয়েকে নিয়ে আমি এখন জীবন সংগ্রামে নেমেছি।

    মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড কারখানার ডা. মেজবা ফারুকী বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নিহত জালালের মেয়ে জান্নাতুল বাকিয়া মরিয়মের ছবি ছাপা হয়েছিল। সেদিনই আমার চোখে পড়ে। ছবিটা দেখে নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে খুবই কান্না পায়। তখনই সিদ্ধান্ত নিই মেয়েটির জন্য কিছু একটা করার। নিজের সেই দায়বদ্ধতা থেকেই প্রাথমিকভাবে তাদের খরচের জন্য দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জান্নাতুল যতদিন লেখাপড়া করবে এবং তার বিয়ে দেওয়া পর্যন্ত সব খরচ আমরা বহন করব।

    এ সময় মাল্টিফ্যাবস লিমিটেড কারখানার এজিএম (এইচআর অ্যাডমিন) মো. আবু সেহাব, ম্যানেজার রিপুল মিয়া, সহকারী ব্যবস্থাপক খ. আহমাদুল কবির মান্না, এক্সিকিউটিভ মো. ওমর হামদু, শ্রমিক প্রতিনিধি সায়লা আক্তার, আরিফা আক্তার, নাজমুল হুদা, মনির হোসেন, সোহাগ হোসেন প্রমুখ।

    নিহত জালাল উদ্দিন (৪০) জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপের সুইং সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের চান মিয়ার ছেলে। জালাল জরুন এলাকার ফজল মোল্লার ভাড়া বাসায় সপরিবার বসবাস করতেন। গত ৮ নভেম্বর বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়ি যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন জালাল। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান জালাল।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close