• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

প্রতিবন্ধী তিন ছেলেকে নিয়ে দিশেহারা বৃদ্ধ দম্পতি

প্রকাশ:  ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:৩৪
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

বয়সের ভারে ন্যুব্জ বিপিন চন্দ্র কর্মকার (৮২)। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সরকারি খাস জায়গায় এক টুকরো বসতভিটা ছাড়া সম্পত্তি বলতে আর কিছুই নেই তার। ওই বসতভিটায় স্ত্রী বিশকা রানী ও তিন প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। পেশায় ঝাড়ুদার বিপিনের বাড়ি তালম ইউনিয়নে। অশীতিপর হয়েও প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ঝাড়ু দেন ইউনিয়নের রানীরহাট বাজার।

বিপিন চন্দ্র কর্মকারের পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে। তার মধ্যে চারজনই প্রতিবন্ধী। এই চারজনের মধ্যে এক ছেলে রতন কর্মকার ১০ বছর আগেই হারিয়ে গেছেন। এখনো তার সন্ধান পায়নি পরিবার। বাকি তিন ভাই শারীরিক, মানসিক ও বাকপ্রতিবন্ধী। তারা হলেন- রতন কর্মকার, ভবানী কর্মকার ও বিপ্লব কর্মকার। তবে ছেলে বিনয় কর্মকার, মেয়ে সন্ধ্যা রানী কর্মকার ও সারথী কর্মকার সুস্থ আছেন।

বিশকা রানী জানান, বিপিনের আয়ে কোনো মতো চলছে সংসার। অভাবের সংসার ও প্রতিবন্ধী তিন ছেলেকে নিয়ে আর পেরে উঠছেন না তিনি। তারা প্রতিবন্ধী হওয়ায় নানা সময় নানা আচরণ ও ঝামেলা করে। এতে এই বয়সে তিন প্রতিবন্ধী ছেলেকে সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপিন-বিশকা দম্পতির জন্য।

তিনি বলেন, বয়স হয়েছে, তাও ঘরের বাইরে কাজ করছেন স্বামী। আমরা দুজনই নানা রোগে আক্রান্ত। আমাদের অনুপস্থিতে আগামী দিনে ওই তিন প্রতিবন্ধী সন্তানের কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে আমাদের। প্রতিবন্ধী তিন সন্তানকে নিয়ে আর কষ্ট সইতে পারছি না।

বিপিন কর্মকার জানান, তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ২০২২ সালের জুন মাসে রতন কর্মকার ও ভবানী কর্মকারের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড হয়েছে। কিন্তু স্ত্রী বিশকা রানীর বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ছেলে বিপ্লবের কোনো সরকারি ভাতা জোটেনি। তবে দুই সন্তানের মতো তিনি নিজেও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেয়েছেন। এতে বর্তমানে তারা তিনজন মিলে মাসে ২ হাজার ২৫০ টাকা ভাতা তুলতে পারছেন। যা কিছুটা সহযোগিতা করছে সংসার চালাতে।

তিনি জানান, সরকারি ভাতা পাওয়ায় পরিবারের কষ্ট কিছুটা কমলেও পাঁচ সদস্যের সংসার চালানো খুব কষ্টকর। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের উচ্চমূল্যে সংসার চালাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। এ ছাড়াও বৃদ্ধ তারা স্বামী-স্ত্রী নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিভিন্ন ওষুধও কিনে খেতে হচ্ছে, ফলে সংসারের খরচ আরও বেড়েছে।

এ ব্যাপারে তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক বলেন, চলতি বছর ওই পরিবারে তিনটি ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। আর অবশিষ্ট বিশকা রানীর বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী বিপ্লব কর্মকারের ভাতার কার্ডও করে দেওয়া হবে।

তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, অবশিষ্ট দুজনের ভাতার কার্ড হলে তারা আর্থিকভাবে আরও একটু সচ্ছল হবেন। এতে হয়তো তাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।

বৃদ্ধ দম্পতি,প্রতিবন্ধী,সিরাজগঞ্জ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close